সবথেকে নিরাপদ উপায়ে কিভাবে টাকা ডবল বা দ্বিগুণ হবে? #6 আমার পছন্দ

5/5 - (3 জন রেটিং করেছেন)

‘টাকা ডবল’ – কথাটার সাথে জড়িয়ে আছে মধ্যবিত্তের আবেগ। আর এই আবেগকে অস্ত্র করেই বিভিন্ন স্কিমে বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে একসময়ে যেমন, ‘৫ বছরে টাকা ডবল’, ‘৬ বছরে টাকা ডবল’ ইত্যাদি ভাষায় বিজ্ঞাপন দিয়ে দেওয়াল লিখন হত, তেমনই আবার এটা ব্যবহার করেই নারদা – সারদা – রোজভ্যালি নামের চিটফান্ডের মতো স্ক্যামে ঠগবাজিও হত। অবশ্য হত বললে ভুল হবে, এখনও হয়। পরিচিত লোকটা যখন বলে ‘এখানে টাকা রাখুন ৪ বছরে ডবল হয়ে যাবে’ তখন শত ঝুঁকি সত্ত্বেও সহজে টাকা বাড়ানোর এই লোভটা সম্বরণ করাই মুশকিল হয়ে যায়…

আসলে আমাদের মন সরল সাদাসিধে হিসেব ভালবাসে। টাকা ডবলের কথা যখন কানে আসে তখন মনের মধ্যে সোজা একটা বার্তা যায়, আসলের সমান টাকা রিটার্ন বা সুদ হিসাবে পাওয়া যাবে। অর্থাৎ নিজের একভাগের বিনিয়োগের বদলে অতিরিক্ত পুরো একভাগ সহ মোট দুভাগ ফেরত পাওয়া যাবে। আর এজন্যই তো অনেক সময়েই আমরা কোনো একটা বিনিয়োগের বিকল্প কতটা ভালো বা সেক্ষেত্রে রিটার্ন কেমন সেটা এক লহমায় বুঝতে কত সময়ে টাকা ডবল হবে সেটা জানার চেষ্টা করি।

আমরা মধ্যবিত্তরা কষ্টের আয় করা কটা টাকা খরচ খরচা সামলানোর পর যেটুকু বাঁচাতে পারি সেটা সুরক্ষিত জায়গায় বিনিয়োগ করে ভবিষ্যতে সচ্ছলতার স্বপ্ন দেখি। আর বিনিয়োগ করে ডবল টাকা ফেরত পাওয়াটা আমাদের কাছে অনেক কিছু না পাওয়ার মাঝে বেশ একটা বিশেষ কিছু পাওয়ার মতোই… তাই এই নিবন্ধে আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরব বিনিয়োগের এমন কিছু বিকল্পের কথা যেখানে বিনা ট্রাবলেই আপনি আপনার সঞ্চয় ডবল করতে পারবেন।

তবে আসল কথায় আসার আগে চলুন জেনে নিই একটা সহজ অঙ্কের বিষয়ে, যেটার সাহায্যে যেকোনো বিনিয়োগের ক্ষেত্রে রিটার্ন বা সুদের হার জানলেই কত বছরে টাকা ডবল হবে সেটা এক ঝটকায় হিসেব করে নিতে পারবেন…

বাহাত্তরের নিয়ম

কত বছরে টাকা ডবল হবে (পাওয়া সুদ বা রিটার্নের হার অনুযায়ী) সেটা হিসেব করার সহজ একটা উপায় হচ্ছে, টাকা জমানোর সুদ বা বিনিয়োগে পাওয়া রিটার্নের হার দিয়ে ৭২ কে ভাগ করা। এই ভাগের ভাগফল হিসাবে যে সংখ্যাটা পাওয়া যায় সেটাই ওই বিনিয়োগে টাকা ডবল হওয়ার বছরের সংখ্যা।

অর্থাৎ,

টাকা ডবল হওয়ার সময়কাল (বছরে) =  ৭২ ÷ সুদ বা রিটার্ন পাওয়ার হার

এই অঙ্কে পুরোপুরি নিখুঁত হিসেবটা পাওয়া যায় না বটে, তবে যে উত্তরটা পাওয়া যায় সেটা নিখুঁত উত্তরের একদম ধারে কাছেই থাকে।

উদাহরণঃ

ধরুন ব্যাংকে ফিক্স ডিপোজিট করলে আপনি ৮% হারে সুদ পাবেন। আগামী বেশ কয়েক বছর এভাবেই যদি সমহারে সুদ পেতে থাকেন তাহলে মোটামুটি ৭২ ÷ ৮ = ৯ বছরে আপনার টাকা ডবল হয়ে যাবে।

আবার, কোনো মিউচুয়াল ফান্ডে বাৎসরিক ১২% হারে রিটার্ন পাওয়া গেলে মোটামুটি ৭২ ÷ ১২ = ৬ বছরেই আপনার ক্যাপিটাল ডবল হয়ে যাবে।

আরও পড়ুনঃ  জমি বাড়ি না কিনেই 300 টাকায় রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ। আরইআইটি

কোথায় কত সময়ে টাকা ডবল?

এই নিবন্ধে যেহেতু মধ্যবিত্তের কষ্টের টাকা ডবল করার কথা হচ্ছে তাই অতিরিক্ত ঝুঁকি সম্পন্ন বিনিয়োগের বিকল্প গুলো এক্ষেত্রে বাদ দেবো। ঝুঁকি বেশি নিলে যেমন কম থেকে কম সময়ে টাকা ডবল হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে তেমনিই আবার প্রতিকূল পরিস্থিতিতে রিটার্নের হার কমে গিয়ে কম সময়ে ডবল হওয়ার বদলে অনেক বেশি সময় লেগে যেতে পারে বা কপাল খুব খারাপ হলে টাকা ডবল হওয়ার বদলে হাফ-ও হয়ে যেতে পারে!

তাই, টাকা ডবল করার নিরাপদ এবং নগন্য বা বিনা ঝুকি সম্পন্ন উপায় গুলো হল,

কিষাণ বিকাশ পত্র বা কেভিপি

কিষাণ বিকাশ পত্র হচ্ছে পোস্ট অফিসের একটা ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের স্কিম। এটা প্রথম শুরু হয়েছিল ১৯৮৮ সালে চাষী ভাইদের উদ্দেশ্যে। সেজন্যই এই স্কিমের এমন নাম। তবে পরে এটা সবার জন্যই চালু হয়ে যায়।

কিন্তু যেকেউ এই স্কিমের সার্টিফিকেট কিনতে সক্ষম হওয়ায়, কালো টাকা সাদা করার উদ্দেশ্যে এই স্কিমের অপব্যবহার করা হতে পারে, এই আশঙ্কায় ২০১১ সালে এই স্কিম সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে নতুন সরকার ২০১৪ সালে নতুন রুপে নতুন কিছু নিয়মের বেড়াজাল দিয়ে এই স্কিম পুনরায় চালু করে।

এই স্কিমে বিনিয়োগ করতে হলে ন্যূনতম ১০০০ বা এর উপরে ১০০-র গুনিতকে যেকোনো মূল্যের সার্টিফিকেট কিনতে হয়। নতুন নিয়মে কেওয়াইসি এবং ৫০০০০ টাকার উপরের বিনিয়োগে প্যান নম্বর উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক।

বিনিয়োগের অংক যখন ডবল হয়ে যায় তখনই এই স্কিমে প্রাপ্ত সার্টিফিকেটের ম্যাচুরিটি হয়ে যায়। সরকার প্রতি কোয়ার্টারে এর সুদ রিভাইস করে। অন্তিম রিভিশন অনুযায়ী এখন এর সুদ চলছে ৭.৫%। মানে এই মুহূর্তে এই সার্টিফিকেট কিনলে বা এই স্কিমে টাকা রাখলে ৭২ ÷ ৭.৫ = ৯.৬ বা সাড়ে ৯ বছরের কিছু বেশি সময়ে (প্রকৃত হিসেব অনুযায়ী ৯ বছর ৭ মাসে) ম্যাচিওর করবে বা বিনিয়োগের টাকা ডবল হয়ে যাবে।

এই স্কিমে টাকা রাখার প্রাথমিক ২ বছর ৬ মাসের পর চাইলে কোনো পেনাল্টি ছাড়া প্রি ম্যাচিওর ক্লোজার-ও সম্ভব। এটা একটা সরকারি স্কিম হওয়ায় এতে রিটার্ন পাওয়ার গ্যারান্টি ১০০%। মোটামুটি ভালো রিটার্ন পাওয়া গেলেও এক্ষেত্রে কিন্তু কোনো প্রকার ট্যাক্সের ছাড় পাওয়া যায় না।

ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেট বা এনএসসি

এটাও পোস্ট অফিসের একটা স্কিম। ভারতের সবথেকে নিরাপদ বিনিয়োগের বিকল্পগুলোর মধ্যে একটা হল এটা। পোস্ট অফিসের স্কিম হলেও, পোস্ট অফিসের পাশাপাশি যেকোনো পাবলিক সেক্টর ব্যাংক এবং সব থেকে বড় তিনটে প্রাইভেট ব্যাংক মানে আইসিআইসিআই, এইচডিএফসি এবং অ্যাক্সিস-এও এই স্কিমে বিনিয়োগের জন্য আবেদন করা যায়। আগে এই স্কিমে বিনিয়োগ করলে একটা প্রিন্ট করা সার্টিফিকেট দেওয়া হত। তবে এখন ইলেকট্রনিক মোডে বা পাসবুক মোডে রেকর্ড করা হয়।

কিষান বিকাশ পত্রের মতোই এক্ষেত্রেও ন্যূনতম ১০০০ টাকার উপরে যে কোনো অঙ্কে বিনিয়োগ করা যায়। তবে এর ম্যাচুরিটি হয় পাঁচ বছর পরে। কেভিপির মতো এর সুদও প্রতি কোয়ার্টারে রিভাইস করা হয়। অন্তিম রিভিশন অনুযায়ী এখন এর সুদ ৭.৭%। মানে এই স্কিমে বিনিয়োগ করলে ৭২ ÷ ৭.৭ = ৯.৩৫ বা মোটামুটি ৯ বছর ৪-৫ মাসে টাকা ডবল হবে।

কেভিপির মতো সরকারি স্কিম হওয়ার জন্য এক্ষেত্রে করা বিনিয়োগও প্রায় ১০০% নিরাপদ। এর আরও একটা সুবিধা হচ্ছে দেড় লাখ পর্যন্ত বিনিয়োগে ট্যাক্সের সুবিধাও পাওয়া যায়।

আরও পড়ুনঃ  শেয়ার বাজারে ইনভেস্টিং-এর বিষয়ে ওয়ারেন বাফেটের সেরা 5 টি পরামর্শ - যেগুলো বিনিয়োগে আপনার পথপ্রদর্শক হবে

ট্যাক্স ফ্রী বন্ড

বিভিন্ন সরকারি বা পিএসইউ কোম্পানিগুলো (যেমন ন্যাশনাল হাইওয়েজ অথরিটি অফ ইন্ডিয়া বা এনএইচএআই, পাওয়ার ফিনান্স কর্পোরেশন লিমিটেড বা পিএফসি, হাউজিং অ্যান্ড আরবান ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড বা হুডকো ইত্যাদি) মাঝে মাঝে এই ধরনের ফিক্সড ইনকাম সিকিউরিটি ইস্যু করে ব্যবসার জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ করার উদ্দেশ্যে।

এ ধরনের বন্ড কেনা মানে আসলে ওই সমস্ত কোম্পানিগুলোকে টাকা ধার দেওয়া। এগুলোর ম্যাচুরিটি পিরিয়ড সাধারণত একটু লম্বা হয় মানে ১০, ১৫ বা ২০ বছরের। বন্ড কেনার বদলে পূর্ব নির্ধারিত নির্দিষ্ট সুদের হারে প্রতি বছরের শেষে সুদ পাওয়া যায়। আর ওই পাওয়া সুদের ওপর কোনো ট্যাক্স দিতে হয় না, আর সেজন্যই এই বন্ডের নাম ট্যাক্স ফ্রী বন্ড। ম্যাচুরিটির পরে আসলটা ফেরত পাওয়া যায়।

এক্ষেত্রে বিনিয়োগ ফিজিক্যাল এবং ডিজিটাল দু’ভাবেই করা যায়। ডিজিটাল উপায়ে করতে হলে ডিম্যাট অ্যাকাউন্টের দরকার হয়। এ ধরনের বন্ড কিনলে ম্যাচুরিটি পর্যন্ত ধরে না রেখেও সেকেন্ডারি মার্কেটে শেয়ার বিক্রি করার মতোই চাইলে বিক্রিও করে দেওয়া যায়। আর সেকেন্ডারি মার্কেটে ট্রেড হয় বলেই ইস্যু করার সময় না কিনেও সেকেন্ডারি মার্কেট থেকেও কেনা যেতে পারে।

কোম্পানিগুলো সরকারি বলে এক্ষেত্রেও বিনিয়োগ খুবই নিরাপদ। এমনকি যদি কোম্পানি উঠেও যায় তাহলে সেই কোম্পানির সমস্ত সম্পদ বিক্রি করে বন্ড হোল্ডারদের টাকা মিটিয়ে দেওয়া দেওয়ার শর্তও আরোপ থাকে।

কোম্পানি ভেদে এখন এধরনের বন্ডে কম বেশি ৮% সুদ পাওয়া যাচ্ছে। আর এই অনুযায়ী এক্ষেত্রে বিনিয়োগ করলে টাকা ডবল হতে সময় লাগবে ৭২ ÷ ৮ = ৯ বছর।

পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড বা পিপিএফ

অনেকেই পিপিএফ-এর ব্যাপারে জানেন। যেকোনো ব্যাংক বা পোস্ট অফিসে গিয়ে যে কেউ এ ধরনের অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। এক্ষেত্রে লক-ইন পিরিয়ড ১৫ বছরের। প্রতিবছরে নূন্যতম ৫০০ টাকা থেকে অধিকতম ১.৫ লাখ পর্যন্ত বিনিয়োগ করা যায় এবং এক্ষেত্রে রিটার্ন ঝুঁকিবিহীন ও গ্যারেন্টেড।

এই অ্যাকাউন্টে কত পারসেন্ট সুদ পাওয়া যাবে সেটা কেন্দ্রীয় সরকার ঠিক করে এবং সময় সময়ে ওই সুদ রিভাইসও করা হয়। এই মুহূর্তে পিপিএফে সুদের হার ৭.১% এবং এই হারে এক্ষেত্রে বিনিয়োগের টাকা ডবল হতে সময় নেবে ১০ বছরের কিছু বেশি।

ব্যাংক ফিক্সড ডিপোজিট

ব্যাংক ফিক্স ডিপোজিটের কথা আলাদাভাবে কিছুই বলার নেই। বেশিরভাগ বড় ব্যাংকের ক্ষেত্রেই এখন সুদের হার মোটামুটি ৭.১% মানে ওই পিপিএফ এর মতই। অর্থাৎ টাকা ডবল হতেও সময় নেবে একই। তবে ছোটখাটো কিছু ব্যাংকে এর থেকে বেশি ইন্টারেস্ট দিচ্ছে বটে তবে এক্ষেত্রে একটা কথা বলতেই হয়, যেকোনো ব্যাংকের ক্ষেত্রে কিন্তু ফিক্স ডিপোজিটকে যতটা সুরক্ষিত বলে ধরা হয় ততটাও সুরক্ষিত নয়। আরবিআই-এর নতুন নিয়ম অনুযায়ী কোনো ব্যাংক যদি দেউলিয়া হয়ে যায় সেক্ষেত্রে ডিপোজিটকারীরা এক লক্ষের বেশি টাকা কিন্তু ফেরত পাবেন না। তাই ছোটখাটো ব্যাংক সুদ বেশি দিলেও সেক্ষেত্রে ঝুঁকি কিন্তু একটু বেশি থাকেই।

— উপরে দেওয়া বিনিয়োগের সমস্ত বিকল্প গুলো একদমই ঝুঁকিবিহীন বা খুবই কম ঝুঁকিপূর্ণ বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে। তবে আপনি যদি সামান্য ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত থাকেন তাহলে আরও কম সময়ে টাকা ডবল করার কয়েকটা উপায় হল,

আরও পড়ুনঃ  এসআইপি শুরু করার আগে যে সমস্ত বিষয়গুলো না জানলেই নয়…

মিউচুয়াল ফান্ড

মিউচুয়াল ফান্ড নিয়ে আগেও অন্যান্য আর্টিকেলে কিছু কিছু কথা বলেছি। মিউচুয়াল ফান্ড বহু ধরনের হতে পারে যেমনঃ ইকুইটি, ডেট, হাইব্রিড ইত্যাদি। আর বিভিন্ন ধরণের মিউচুয়াল ফান্ডে ঝুঁকির পরিমাণও বিভিন্ন রকম হয়। তবে যে ক্ষেত্রের মিউচুয়াল ফান্ডই হোক না কেন, সেই ক্ষেত্রে সরাসরি বিনিয়োগ করার থেকে মিউচুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে বিনিয়োগ করা অনেক কম ঝুঁকিপূর্ণ। যেমন ধরুন, শেয়ার বাজারে সরাসরি শেয়ার কিনতে যাওয়ার থেকে যেকোনো ইকুইটি মিউচুয়াল ফান্ড অনেক কম ঝুঁকিপূর্ণ।

তবে প্রথম চারটে বিকল্পের থেকে মিউচুয়াল ফান্ডের ঝুঁকি সবসময়ই বেশি থাকবে। কিন্তু এই অতিরিক্ত ঝুঁকি নেওয়ার পুরস্কার হিসাবে সাধারণত লম্বা সময়ের বিচারে বেশিরভাগ মিউচুয়াল ফান্ডেই (ইকুইটি / হাইব্রিড) ১২-১৫% এমনকি অনেক সময় তার থেকেও বেশি রিটার্ন পাওয়া যায়। ১২% রিটার্ন হিসেবে এক্ষেত্রে বিনিয়োগের টাকা ডবল হতে সময় লাগবে মাত্র ৬ বছর।

কর্পোরেট ডিপোজিট এবং নন কনভার্টেবল ডিবেঞ্চার্স বা এনসিডি

কর্পোরেট ডিপোজিট ব্যাংক ফিক্স ডিপোজিটের মতো কিন্তু ব্যাংক বাদে সাধারণত আরবিআই এর অনুমতিপ্রাপ্ত অন্য আর্থিক বা এনবিএফসি প্রতিষ্ঠানের কাছে করা। ব্যাংক ফিক্স ডিপোজিটের মতোই এক্ষেত্রেও সুদ পাওয়া যায় এবং সাধারণত এর হার ব্যাংক ফিক্সড ডিপোজিটের থেকে কিছুটা বেশি হয়। সুতরাং টাকা ডবল হতে কতটা সময় লাগতে পারে আসা করি আইডিয়া পেয়ে গেছেন।

আর নন কনভার্টেবল ডিবেঞ্চার্স বা এনসিডি অনেকটা ট্যাক্স ফ্রী বন্ডের মতো তবে এক্ষেত্রে বন্ড ইস্যুকারী সরকারি কোম্পানির বদলে বেসরকারি কর্পোরেট কোম্পানি আর বিনিয়োগ ট্যাক্স ফ্রি নয়। ট্যাক্স বাদ দিয়ে অবশ্য এর বাকি সমস্ত বৈশিষ্ট্য প্রায় ওই বন্ডের সমকক্ষই। এক্ষেত্রে কোম্পানি ভেদে 8-11% রিটার্নের হার বিরল নয়। রিটার্নের হার ১০% ধরে নিয়ে এক্ষেত্রে টাকা ডবল হওয়ার সময়কাল ৭২ ÷ ১০ = ৭.২ বা সাত বছরের কিছু বেশি।

তবে এই দুই ক্ষেত্রেই বিনিয়োগের ঝুঁকি অনেকাংশে নির্ভর করছে যে কোম্পানির ফিক্স ডিপোজিট বা এনসিডি কেনা হচ্ছে সেই কোম্পানিটির উপর। তাই ভালো জনপ্রিয় কোম্পানি এবং তার ক্রেডিট রেটিং ও ক্রেডিট হিস্ট্রি দেখে যদি এক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা যায় তবে বিনিয়োগের ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে নেওয়া যায়।

শেষ কথা

বিনিয়োগ করে টাকা ডবল করার কতকগুলো উপায় তো জানতে পারলেন। তবে এর মধ্যে কোন উপায়টা আপনি বেছে নেবেন সেটা নির্ভর করছে আপনার ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা ও মানসিকতা, ক্যাপিটালের পরিমাণ এবং কত সময় পরে আপনার রিটার্ন প্রয়োজন তার উপর। এবং সবদিক বিচার করে তবেই আপনাকে আপনার অন্তিম সিদ্ধান্তটা নিতে হবে। তবে নিজে বুঝতে অসুবিধা হলে যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই নিজের ফিনান্সিয়াল অ্যাডভাইজারের সাথে কথা বলে নিতে ভুলবেন না!

আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। ভালো থাকবেন। 🙂


সুত্রঃ ন্যাশনাল সেভিংস ইন্সিটিউট

মন্তব্য করুন