শেয়ার বাজারে বিনিয়োগে ভালো রিটার্ন পাওয়ার সহজ সূত্র। জেনে নিলেই বাজিমাত!

4.3/5 - (3 জন রেটিং করেছেন)

একমাত্র বিনিয়োগই ইহজীবনে আর্থিক স্বাধীনতা ও সচ্ছলতা এনে দিতে পারে। আর বিশেষজ্ঞরা বলেন শেয়ার বাজারই এই কাজের জন্য সেরা জায়গা। কিন্তু এই শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের বিষয়টাকে গড়পড়তা সাধারণ মানুষ খুবই ভয়ঙ্কর ও জটিল বলে মনে করে। এখানে টাকা লাগিয়ে দারুণ লাভ পাওয়ার আশা করার আগে টাকা ডুবে যাওয়ার আতঙ্ক তাদের গ্রাস করে। ফলস্বরূপ সারাটা জীবন তাদের আর বিনিয়োগটাই করা হয়ে ওঠে না।

কিন্তু এই ব্যপারে ঐ ধরণের ভয় কি সত্যিই যুক্তিযুক্ত? এখানে বিনিয়োগ করাটা আদপে কি ততটাই জটিল? এমন কোনো উপায় কি নেই যেটা অনুসরণ করে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করাটা সবার কাছে জলবৎ তরলং হয়ে যাবে, এমন একটা উপায় যেখানে রিটার্নের আশাটা বেশি থাকবে আবার মূলধনটাও সুরক্ষিত থাকবে….?

সেটাই খুঁজে দেখব আমরা এই নিবন্ধে…।

আমাদের জীবন আর শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ

আমাদের জীবন আর শেয়ার বাজার অনেক ক্ষেত্রেই সমতুল্য বলা চলে। আমাদের জীবনে ভবিষ্যতে কি হতে চলেছে সে ব্যাপারে আগে থেকে আমরা যেমন কেউই কিছু ঠাওর করতে পারি না, ঠিক তেমনি যত বড় বিশেষজ্ঞই হোক না কেন, শেয়ার বাজারে আগামীতে আসলে কী হতে চলেছে সেই ব্যাপারে কিন্তু আগে থেকে নিশ্চিত করে কেউ ই কিছু বলতে পারেনা। তাই, জীবনের মতোই শেয়ার বাজার এবং শেয়ার বাজার থেকে পাওয়া রিটার্ন সব সময়ই অনিশ্চিত – এই কথাটা সর্বৈব সত্য এবং বিনিয়োগের আগেই এটা মেনে নেওয়া খুবই জরুরী। কারণ, মাত্রাতিরিক্ত প্রত্যাশাই বেশীরভাগ সময়ে এখানে বিপর্যয়ের কারণ হয়।

তবে কত সময়ে, কতটা রিটার্ন হবে, সে বিষয়টা অনিশ্চিত হলেও রিটার্ন যে পাওয়া যাবেই না সেটাও কিন্তু নিশ্চিত নয়! পড়াশোনা, চাকরি, সম্পর্ক ইত্যাদি জীবনের অন্য অনেক দিকের মতোই পজিটিভ বা ভালো রিটার্ন পাওয়ার জন্য দরকার জানার, শেখার, একটু ঝুঁকি নেওয়ার, সঠিক সূত্র মেনে চলার, নিজের উপর বিশ্বাস রাখার, লক্ষ্যে অবিচল থাকার আর ধৈর্য বজায় রাখার। ভুলে গেলে চলবে না জীবনের আর ৫টা বড় কাজের মতোই বিনিয়োগটাও লম্বা সময়ের খেলা, এটা করা মানে রাতারাতি বড়লোক হওয়া নয়!

আরো একটা কথা হচ্ছে চাহিদা প্রত্যেকের ক্ষেত্রে আলাদা হয়। শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে কিংবা ট্রেডিং করে আয়ের রাস্তা অনেক। কিন্তু আয়ের চাহিদা অনুযায়ী ঝুঁকির মান নির্ধারিত হয়। প্রথমেই যদি আমরা আমাদের প্রত্যাশা বা চাহিদাটাকে একটা বাস্তব গন্ডির মধ্যে রেখে বিনিয়োগের কথা ভাবি তাহলেই কিন্তু এথেকে একটা স্ট্যান্ডার্ড রিটার্ন পাওয়ার রাস্তা সুগম হয়ে যায়। তবে শেয়ার বাজারই হোক বা অন্য কোনো ক্ষেত্রে, বিনিয়গের সাথে যেমন উচ্চ রিটার্নের আশা থাকবে তেমনই সব সময়ই একটা ঝুঁকিও থাকবে। এবং সেটা মাথায় রেখেই আমাদের এগোতে হবে।

ঝুঁকি আর পুরস্কার

ফেসবুকের স্রষ্টা মার্ক জাকারবার্গ একবার বলেছিলেন, ‘জীবনের সবথেকে বড় ঝুঁকি হচ্ছে কোনো রকম ঝুঁকি না নেওয়া।’ কথাটা জীবনের সব ক্ষেত্রে সত্যি। গড়পরতা জীবনের বাইরে বড় কিছু পেতে হলে বা বড় কিছু করতে হলে নিজের কমফোর্ট জোন থেকে বেরিয়ে এসে একটু ঝুঁকি তো নিতেই হবে। আর এই কথাটা বিনিয়োগ বা শেয়ার বাজারের ক্ষেত্রে ভীষণভাবে সত্যি।

সব রকমের বিনিয়োগ, মানে যে সমস্ত ক্ষেত্রে টাকা খাটিয়ে আরও টাকা আসে সে ধরনের প্রতিটা ক্ষেত্রেই কিছু না কিছু ঝুঁকি থাকেই। এমনকি আমরা যেটাকে সব থেকে সুরক্ষিত বিনিয়োগ মনে করি, মানে ব্যাংকের ফিক্সড ডিপোজিট, সেখানেও কিন্তু একটুখানি ঝুঁকি থাকেই। বিনিয়োগের সমস্ত মাধ্যমের মধ্যে যে ক্ষেত্রে যত বেশি রিটার্ন পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে তত বেশি ঝুঁকি থাকে।

আরও পড়ুনঃ  শেয়ার বাজারের বহুল ব্যবহৃত 40+ টি গুরুত্বপূর্ণ টার্ম বা পরিভাষা ও তাদের অর্থ

শুধুমাত্র শেয়ার বাজারেই বিনিয়োগের রাস্তা অনেক। আর যত কম সময়ে যত বেশি রিটার্ন পাওয়ার রাস্তা ধরা হয় ঝুঁকির পরিমাণ ততই বেড়ে যায়। আমরা এখানে যে সূত্র নিয়ে আলোচনা করব সেখানেও কিছুটা ঝুঁকি থাকবেই। তবে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ঝুঁকি যতটা সম্ভব কম নিয়ে রিটার্নের সম্ভাবনা যতটা সম্ভব বাড়ানোর চেষ্টা করা।

ঝুঁকি কখন বেশি কখন কম?

শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের ঝুঁকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে কম আর কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেশি। যেমন,

  • আলাদা আলাদা কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করার ঝুঁকি বেশি আর একসাথে অনেকগুলো কোম্পানি বা কোনো একটা সূচক ধরে বিনিয়োগ করার ঝুঁকি কম।
  • যত কম সময়ের জন্য বা কম সময়ে বেশি রিটার্ন পাওয়ার আশায় বিনিয়োগ করা হয় ঝুঁকি তত বেশি হয় আর যত বেশি সময়ের জন্য করা হয় ঝুঁকি তত কম হয়।
  • যত বেশি সেক্টরের বা যত বিভিন্ন রকম কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা হয় অর্থাৎ পোর্টফোলিও যত বেশি ডাইভারসিফাই করা হয় বা যত বৈচিত্র আনা হয় ঝুঁকি তত কম হয় আর যত বেশি ফোকাসড বিনিয়োগ করা হয় ঝুঁকি তত বেশি হয়।
  • যত বেশি অজানা অচেনা কোম্পানির শেয়ার কেনা হয় ঝুঁকি তত বেশি হয় আর চেনা পরিচিত বিশ্বস্ত কোম্পানির শেয়ার যত বেশি কেনা করা হয় ঝুঁকি তত কম হয়।
  • ছোট ছোট বা স্মল ক্যাপ কোম্পানির শেয়ার যত বেশি কেনা করা হয় ঝুঁকি তত বেশি হয় আর ব্লুচিপ বা লার্জ ক্যাপ কোম্পানির শেয়ার যত বেশি কেনা হয় ঝুঁকি তত কম হয়।
  • একবারে অনেক টাকা বা সব টাকা লাগানোর থেকে যত বেশি ধাপে ধাপে বিনিয়োগ করা হয় ঝুঁকি তত কম হয়।
  • বাজার যখন উর্ধ্বমুখী বা সবাই যখন লোভী (বুল ফেজ) তখন বিনিয়োগ করার থেকে বাজার যখন নিম্নমুখী বা বাজারে যখন ভয় বিরাজ করছে (বিয়ার ফেজ) তখন করলে ঝুঁকি কম হয়।

সেরা বিনিয়োগঃ নিফটি ৫০

উপরের আলোচনা অনুযায়ী সহজে সব থেকে কম ঝুঁকি নিয়ে যার উপর ভিত্তি করে লম্বা সময়ের জন্য বিনিয়োগ করা উপযোগী হবে সেটা হচ্ছে দেশের সবথেকে বেশি অনুসৃত সূচক নিফটি ৫০। কারণ,

  • নিফটি ৫০ সূচক মানে হচ্ছে ভারতের সবথেকে বড় বড় ও ভরসাযোগ্য ৫০ টা কোম্পানির বিশেষ আনুপাতিক হারের সমষ্টি। ফলে এই সূচক ধরে বিনিয়োগ করলে একসাথে বড় বড় ৫০ টা কোম্পানিতে টাকাটা যায়। আর সহজেই এভাবে ডাইভারসিফাই হওয়ার জন্য কোনো একটা কোম্পানিতে কোনোরকম কিছু খারাপ হলেও তার আঁচ পুরো পোর্টফোলিও-র উপর আসে না।
  • এই সূচক সম্পর্কে সবকিছু সিদ্ধান্ত নেয় তাবড় তাবড় বিশেষজ্ঞরা। এবং সময় সময়ে এর অন্তর্গত কোম্পানিগুলোর পারফরম্যান্স অনুযায়ী তাদের আনুপাতিক হারের রিব্যালেন্সিং-ও হয় এবং কখনো কখনো কোনো কোম্পানি বাদ পড়ে এবং তার বদলে নতুন কোম্পানি যোগ হয়। ফলে এই সূচক ধরে বিনিয়োগ করলে পোর্টফোলিও রিব্যালেন্সিং নিয়ে আর ভাবনা চিন্তা করতে হয় না।
  • দেশী বিদেশী অনেক বড় বড় ফান্ড হাউস এই সূচক ধরে বিনিয়োগ করে। ফলে তাদের রুটিন বিনিয়োগের সময় আর কোথাও হোক না হোক এই সূচক ধরে বিনিয়োগ আসেই।
  • এই সূচক এবং এই সূচকের অন্তর্গত কোম্পানিগুলো সরকারী রেগুলেটরের তীক্ষ্ণ নজরে থাকে বলে অনৈতিক কিছু হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে।
  • এছাড়া নিফটি ৫০ ইটিএফ ফান্ড গুলো সক্রিয়ভাবে ম্যানেজ করার প্রয়োজন পড়েনা বলে ম্যানেজমেন্ট চার্জের হার কম হয় আর খুব কম টাকায় বিনিয়োগ শুরু করা যায়।

নিফটি ৫০ সূচক আর ভারতীয় অর্থনীতির গঠনমূলক বৃদ্ধির গল্প 

উপরের কারণগুলো ছাড়াও নিফটি ৫০– তে বিনিয়োগ করতে বলার পিছনে আরও অনেক যুক্তি আছে। দেশের অর্থনীতি আর শেয়ার বাজার অঙ্গাঅঙ্গি ভাবে জড়িত। দেশ বা দেশের অর্থনীতির হাল কেমন বা দেশ কত উন্নতি করছে বা কত বড় হচ্ছে তার সূচক দেশের জিডিপি। আর দেশের সবথেকে বড় বড় কোম্পানিগুলো কেমন ব্যবসা করছে বা আরও কত বড় হচ্ছে তার সূচক এই নিফটি ৫০।

নিফটি ৫০-র মতোই আরও এক সুপরিচিত সূচকের নাম সেনসেক্স। এটা আর নিফটি ৫০ সমতুল্য তবে, নিফটি নতুন এবং বেশি অনুসৃত হওয়ায় আমরা আপাতত শেয়ার বাজারের প্রধান সূচক হিসেবে নিফটি ৫০-কেই ধরছি।

দেশের জিডিপি আর এই নিফটি-৫০ অর্থগতভাবে আলাদা হলেও এই দুটো একটা কয়েনের এপিঠ ওপিঠ বলা চলে। দেশের বড় বড় কোম্পানিগুলো বাড়ার সাথে সাথে একদিকে যেমন দেশের জিডিপি বাড়ে অন্যদিকে কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দামও বাড়ে আর তার সাথে সাথেই বাড়ে নিফটি ৫০-র মতো শেয়ার বাজারের সূচকগুলো।

আরও পড়ুনঃ  10 বছরে কিভাবে কোটিপতি হওয়া যায়? এটা কি আদৌ সম্ভব...?

ভারত সম্ভাবনাময় দেশ। একদিকে ভৌগোলিক ও জলবায়ুর দিক দিয়ে এই দেশ অন্য অনেক দেশের থেকে অনেক বেশি সুবিধা ভোগ করে। আর অন্যদিকে বিশাল জনসংখ্যার দরুন কর্মক্ষম ও প্রতিভু লোকেরও এখানে কোনো অভাব নেই। সেজন্যই স্বাধীনতার পর থেকে বিগত কয়েক দশক ধরে এই দেশ গরীব থেকে উন্নয়নশীল হয়ে ক্রমশ উন্নত দেশ হওয়ার পথে।

আর দেশের উন্নতির সাথে সাথে যেমন এদেশের জিডিপি ক্রমবর্ধমান ঠিক তেমনি নিফটি ৫০-ও বিগত বছরগুলোতে ক্রমবর্ধমান। গুগলে নিফটির হিস্টোরিকাল চার্ট দেখলে দেখা যাবে ১৯৯৯ সালের ১লা জানুয়ারি এই সূচক ৮৯০ থেকে ২৫ বছর পর আজ ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে গিয়ে পৌঁছেছে ২১৭০০-তে। অর্থাৎ, বিগত ২৫ বছরে এই সূচকের বৃদ্ধি হয়েছে ২০০০০ পয়েন্টেরও বেশি যা শতাংশের হিসাবে ২৩৩৯%। অর্থাৎ অন্যভাবে বলা যায়, ২৫ বছর আগে এই সূচক অনুযায়ী বিনিয়োগ করলে আজ তা ২৩ গুনের থেকেও বেশি বেড়ে যেত।

তবে চার্টটাকে একটু খুঁটিয়ে দেখলে দেখা যাবে এর মাঝে কম সময়ের ব্যবধানে সব সময় কিন্তু এই বৃদ্ধির সূত্র মেলে না। যেমন, ২০০৮ এর জানুয়ারি থেকে ২০১৪-র জানুয়ারি পর্যন্ত ৬ বছরে রিটার্ন প্রায় শূন্য। আবার ঐ একই ২০০৮ এর ১ বছর পরের রিটার্ন নেগেটিভ ৫০%। অন্যদিকে দেখা যায় ২০০৯ থেকে ২০১০ পর্যন্ত মাত্র ১ বছরের কিংবা হালফিলে ২০২০-র মার্চে করোনার পতনের পর থেকে দেড় বছরের রিটার্ন ১০০%-এরও বেশি!

খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলে ২৫ বছরের ইতিহাসে কম সময়ের ব্যবধানে এ ধরনের চরম এবং বিপরীত ফলাফল বহু দেখা যাবে। তবে যদি সময়ের ব্যবধানটা ১০ বছর বা তার বেশি ধরা হয় তাহলে মোটামুটি সব সময়ই স্ট্যান্ডার্ড একটা পজিটিভ রিটার্ন পাওয়াই যায়। আর বিনিয়োগটা যদি সেই সময়ের মাঝে ধাপে ধাপে করা হয় তাহলে কম সময়ের উত্থান পতনের শক্‌-টা আরো খানিকটা অ্যাবজর্ভ করে নেওয়া যায়। সাধারণত এতে রেগুলার রানিং লং টার্ম বার্ষিক রিটার্ন ১৪%-এর থেকে বেশিই হয়।

সরল সূত্র

এবার তাহলে উপরের পুরো আলোচনা থেকে বিনিয়োগের যে সুত্র বেরিয়ে আসছে সেটা সরল আকারে গুছিয়ে নেওয়া যাক… 

কোথায় বিনিয়োগ?

এতক্ষণ নিফটি ৫০ সূচকে বিনিয়োগ করার কথা বললেও সরাসরি কিন্তু এতে টাকা লাগানো যায় না। এই সূচক অনুযায়ী বিনিয়োগ করতে হলে ইটিএফ বা কোনো মিউচুয়াল ফান্ডের রাস্তা ধরতে হয়। নিজস্ব ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট আর টেকনোলজির সাথে সামান্য পরিচিতি থাকলে খুব সহজেই এই সূচকের ইটিএফ-এর ইউনিট কেনা যায়। আর টেকনিক্যাল দিকগুলোতে না যেতে চাইলে যে যেকোনো ব্যাংক বা এএমসি-র অফিস থেকে অফলাইনেও এই সূচকের যেকোনো ফান্ডে বিনিয়োগ করা যায়।

এই সূচক অনুসরণ করে তৈরি অনেক এএমসি-র আলাদা আলাদা নামের ফান্ড বা ইটিএফ আছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটা হলো,

  • এসবিআই নিফটি 50 ইটিএফ
  • নিপন ইন্ডিয়া নিফটি ৫০ বিস ইটিএফ
  • ইউটিআই নিফটি ৫০ ইনডেক্স ফান্ড
  • আইসিআইসিআই প্রুডেনশিয়াল নিফটি ৫০ ইনডেক্স ফান্ড
  • টাটা নিফটি ৫০ ইনডেক্স ফান্ড
  • এইচডিএফসি ইনডেক্স ফান্ড নিফটি ৫০ প্ল্যান
  • নিপ্পন ইন্ডিয়া ইনডেক্স নিফটি ৫০
  • বন্ধন নিফটি ৫০ ইনডেক্স ফান্ড
আরও পড়ুনঃ  বিনিয়োগের 4 টে স্ট্র্যাটেজি বা কৌশল। নতুনদের না জানলেই নয়...

ইত্যাদি। 

কতদিনের জন্য বিনিয়োগ?

এই নিয়ে অনেক কথাই ইতিমধ্যে হয়েছে। বিনিয়োগ যত বেশি সময়ের জন্য করা হবে ঝুঁকি তত কম হবে। তাই উপরের আলোচনা অনুযায়ী আমরা এক্ষেত্রে বিনিয়োগের ন্যূনতম সময়কাল 10 বছর বা তার বেশি ধরে নেব। তবে কপাল ভালো হলে বা সঠিক সময়ে শুরু করা গেলে এর অনেক কম সময়েই ডিম্যাট ড্যাশবোর্ডে বড় সবুজ অংকের ফলাফল আশা করা যেতে পারে!

কিভাবে বিনিয়োগ?

এই নিবন্ধের একটা প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে সহজে বিনিয়োগ করা। সহজে ও ঝুঁকি কম রেখে নিফটি ৫০ সূচকের যেকোনো ইটিএফ বা ফান্ডে বিনিয়োগ করার সবথেকে ভালো উপায় হচ্ছে এসআইপি করা। 

লাম্পসাম বা এককালীন বড় একটা টাকা বিনিয়োগ করা এসআইপির থেকেও সরল। তবে বাজার যখন উপর দিকে থাকে তখন সেটা করলে ভালো রিটার্ন পেতে সময় বেশি সময় লেগে যেতে পারে বা অন্য কথায় ঝুঁকি একটু বেশি হতে পারে। তাই বাজার যখন বেশ নিচে থাকে তখন লাম্পসাম করা খারাপ নয়।

এছাড়া, একটা এসআইপি চালু রেখে সময় সুযোগ মতো মাঝে মাঝে লাম্পসাম করলে ভালো রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনাটাকে আরও খানিকটা বাড়িয়ে নেওয়া যায়। আর এই ভালো সময় সুযোগ বোঝার জন্য যেকোনো চার্ট দেখার ওয়েবসাইটে গিয়ে যেকোনো একটা মুভিং অ্যাভারেজ ইন্ডিকেটর ব্যবহার করা যেতে পারে। নিফটি ৫০-র চার্টের ওপর ওই ইন্ডিকেটর প্লট করলে দেখা যায় সূচক কখনো মুভিং অ্যাভারেজ লাইনের উপরে থাকে আর কখনো নিচে। আর যখন সূচক মুভিং অ্যাভারেজ লাইনের যত কাছে বা যত নিচে থাকে তখন লাম্পসাম করার জন্য তত উপযুক্ত সময় হয়।

অতিরিক্ত কয়েকটা খেয়াল রাখার বিষয়

  • কাছে বিনিয়োগের জন্য যা টাকা আছে সবসময় তার সবটা শেয়ার বাজারে লাগিয়ে রাখলে চলবে না। কিছু টাকা ক্যাশ হিসেবে বা এমন ভাবে রাখতে হবে যাতে প্রয়োজন পড়লেই সেটা ব্যবহার করা যায়। তবেই বাজার পড়ার সময় টাকা লাগিয়ে করে রিটার্নের হারটা বাড়ানো যাবে।
  • ১০ বছরের জন্য বিনিয়োগ করার কথা ভাবলে সেটাকে ১০ বছর ধরেই চলতে হবে। তার আগে কোনো কারনেই ঐ টাকায় হাত দেওয়া চলবে না। অর্থাৎ, এর মাঝে কখনো কোনো ব্যক্তিগত কারণে টাকার প্রয়োজন মেটানোর জন্য আলাদা একটা ইমারজেন্সি ফান্ড রেডি রাখতে হবে।
  • শেয়ার বা ফান্ডের ইউনিট কেনার পর কম সময়ের মধ্যে তা অনেকটা বেড়েই যাক বা কমেই যাক, আনন্দ বা ভয়ের বশে বিক্রি করার কথা ভাবলে চলবে না। নিজের লক্ষ্যে অবিচল থেকে এবং ধৈর্য ধরে ইনভেস্টেড থাকতে হবে লম্বা সময়ের লাভটা নেওয়ার জন্য।

শেষ কথা

যা কিছু বলার ছিল ইতিমধ্যেই বলা হয়ে গেছে। শেষকালে একটাই একটাই কথা বলব, একটু স্বপ্ন দেখুন, একটু সাহস করুন, একটু ক্যালকুলেটেড রিস্ক নিন, লম্বা রেসের ঘোড়া হন আর বিনিয়গটা শুরু করুন। ভালো থাকবেন। 🙂

মন্তব্য করুন