শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের কথা ভাবছেন? নাকি ইতিমধ্যেই বিনিয়োগ করা শুরু করে দিয়েছেন? বড় লাভের আশাতেই নিশ্চয়ই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন? কিন্তু এখানে বিনিয়োগে বা শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে কী কী ঝুঁকি আছে, সেগুলো কি জেনে নিয়েছেন?
‘শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ বাজারগত ঝুঁকি সাপেক্ষ…’ শেয়ার বাজার সংক্রান্ত বিনিয়োগের বিজ্ঞাপনে এধরনের কথা বারেবারে শোনা যায়। আবার এটাও সত্যি যে, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যেখানে যত বেশি ঝুঁকি সেখানে রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনাও তত বেশি হয়। শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করলে ব্যাংকের ফিক্স ডিপোজিট বা বিনিয়োগের অন্যান্য বিকল্পের থেকে অনেক বেশি রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাইতো প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করাকেই বিনিয়োগের সেরা মাধ্যম বলে মনে করা হয়।
কিন্তু গোলাপের কাঁটার মতোই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের কাঁটা স্বরূপ বিভিন্ন রকম ঝুঁকি গুলোর জন্যই সময়ে সময়ে বিভিন্ন শেয়ারের দামের পতন হয়। এ ধরনের 15 টা ঝুঁকির ব্যাপারে চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক।
বাজারগত ঝুঁকি বা মার্কেট রিস্ক
যখন কোনও শেয়ার কেনা হয় তাতে লাভ বা লোকসান কি হবে সেটা তার দামের পরিবর্তনের উপর নির্ভর করে। কেনার পরে দাম বাড়লে লাভ হয় আর কমলে লোকসান। কোম্পানির আভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক বিভিন্ন কারণে কোনও শেয়ারের যোগানের থেকে চাহিদা বাড়লে দাম বাড়ে এবং উল্টোটা হলে দাম কমে।
কিন্তু যতক্ষণ শেয়ার হোল্ড করে রাখা হয় ততক্ষণ শেয়ারের দামের এই সাময়িক উপর নিচ হওয়ায় কিচ্ছু এসে যায় না। কারণ দাম যাই থাকুক বিক্রি তো আর করা হচ্ছে না।
তবে শেয়ার বিক্রি করার প্রয়োজন পড়লে বা বিক্রি করে দিতে চাইলে সেসময়ে যদি শেয়ারের দাম কম থাকে তবে ক্ষতি হজম করতে হয়। ধরুন আপনার কেনা কোনও শেয়ার নিজের বিশেষ প্রয়জনে 15% লাভে আপনি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিলেন। কিন্তু সেদিনেই একটা গুজবের জন্য শেয়ার বাজারে ধস নামে এবং অন্যান্য শেয়ারের সাথে সাথে ওই শেয়ারের দামও হঠাৎ করে একদিনেই 20% পড়ে যায়।
আবার আপনারও সেদিনেই সেটা বিক্রি করা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না। অগত্যা আপনাকে বাধ্য হয়ে ক্ষতি হওয়া সত্ত্বেও সেটা বিক্রি করতেই হয়। কিন্তু খবর ভুয়ো ছিল বলে পরের দিনই শেয়ারের দাম আবার আগের জায়গায় পৌঁছে যায়। সবকিছু ঠিকঠাক থাকা সত্ত্বেও আপনি কিন্তু এক্ষেত্রে লাভ করতে ব্যর্থ হন। এটাই বাজারগত ঝুঁকি।
খবরের হেডলাইনের ঝুঁকি
উপরের উদাহরণটার মতোই ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার অতি সক্রিয়তার এই সময়ে খবরের হেডলাইনে নেগেটিভ কোন খবর একটা কোম্পানি, একটা সেক্টর বা এমনকি সমগ্র শেয়ার বাজারকে নাড়িয়ে দিতে পারে। শেয়ারের দাম পড়ে যাওয়ার পাশাপাশি এর প্রভাব কোম্পানির ব্যবসাতেও পড়ে। আজকের দিনে কোনো কোম্পানিই এই ঝুঁকি থেকে সুরক্ষিত নয়।
সাম্প্রতিক কালে হিন্ডেনবার্গ প্রকাশিত আদানি গ্রুপের ব্যাপারে নেগেটিভ খবর আদানির সমস্ত কোম্পানি সহ কিছু ব্যাংক ও আরো অনেক সম্পর্কিত কোম্পানির শেয়ারের দামের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। আদানির ব্যাপারে যে অভিযোগ উঠেছে সেটা কিন্তু এখনো পর্যন্ত সঠিক না বেঠিক কিছুই প্রমাণ হয়নি। কিন্তু তার আগেই খবরের হেডলাইন হয়ে যাওয়ার জন্য এই অবস্থা তৈরি হয়েছে।
কোম্পানি সংক্রান্ত ঝুঁকি
কোনও কোম্পানির শেয়ার কেনা মানে আসলে সেই কোম্পানির অংশীদারত্ব লাভ করা। সাধারণত আমরা কোনো কোম্পানির অতীতের পারফরম্যান্স, বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষ্যতের সম্ভাবনা ইত্যাদি সবকিছু বিচার করে তবেই সেই কোম্পানির শেয়ার কিনে থাকি।
কিন্তু বিশ্লেষণ যতই ভালো হোক বা যত ভালো শেয়ারই বাছা হোক না কেন ভবিষ্যতের কথা কেউ জানে না। একটা কোম্পানির ব্যবসা কেমন চলবে সেটা অনেক কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে। তাই কোম্পানিতে বা কোম্পানির ব্যবসার জায়গায় কোনো রকম সমস্যা তৈরি হলে তার প্রভাব কিন্তু শেয়ারের দামেও পড়ে এবং তার আঁচ শেয়ারহোল্ডারদের কাছেও যায়।
রেটিং এর ঝুঁকি
বড় বড় অ্যানালিস্টরা সময়ে সময়ে বিভিন্ন কোম্পানির পারফরম্যান্স ও আউটলুকের ওপর ভিত্তি করে রেটিং করেন। পুরনো রেটিং থেকে বর্তমান রেটিং যদি ভালো হয় সেক্ষেত্রে সাধারণত শেয়ারের দাম বাড়ে এবং অবনতি হলে শেয়ারের দাম কমে।
এই রেটিং গুলো সামগ্রিকভাবে শেয়ারহোল্ডারদের সাইকোলজির উপর কাজ করে। অনেক সময় রেটিং একটু খারাপ হলে যে কারণে রেটিং-এর অবনতি হলো সেই কারণের থেকে শেয়ারের দামের পতন অনেক বেশি হয়ে যায়।
লিকুইডিটির ঝুঁকি
কোনো কোম্পানির লিকুইডিটি মানে হচ্ছে সেই কোম্পানি কত সহজে তার প্রয়োজনে ক্যাশের যোগান দিতে পারে সেই ক্ষমতা। একটা কোম্পানি ভালোভাবে চলার জন্য লিকুইডিটি বা ক্যাশের যোগান থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোম্পানিতে লিকুইডিটি থাকলে যেমন ডিভিডেন্ড পাওয়া যায় তেমনি কোম্পানি তার এক্সট্রা ক্যাশ ব্যবসা বৃদ্ধিতেও ব্যবহার করতে পারে।
কিন্তু উল্টোটা হলে, মানে কোম্পানিতে লিকুইডিটির সমস্যা দেখা দিলে তারা ডিভিডেন্ড তো দিতে পারেই না উপরন্ত কোম্পানি চলার জন্য বেসিক খরচ গুলো চালাতেও অসুবিধার সম্মুখীন হয় এবং যার ফল গিয়ে শেয়ারের দামে পড়ে।
ধরা পড়ার ঝুঁকি
কথায় আছে ‘চুরিবিদ্যা মহা বিদ্যা যদি না পড়ো ধরা’। ব্যবসার ক্ষেত্রেও এটা ভীষণভাবে সত্যি। অনেক কোম্পানির ভেতরেই কিছু না কিছু গন্ডগোল থাকেই। গন্ডগোলে গুলো যদি শুরুতেই ধরা পড়ে এবং তা শুধরে নেওয়া হয় তবে রক্ষা পাওয়া যায়। আবার যদি কোনদিনই না ধরা পড়ে তাহলেও কোনো সমস্যা তৈরি হয়না।
কিন্তু কোনো সমস্যা যদি ভিতরে ভিতরে বিশাল আকার ধারণ করে এবং তারপর কোনো একদিন অডিটর, রেগুলেটর বা অন্য কোন অথরিটির হাতে ধরা পড়ে যায় তখন কোম্পানি বিশাল হলেও তার রেপুটেশনে যে আঁচড় লাগে এবং শেয়ারের দামে যে পতন হয় তা অনেক সময় আর কোনদিনই ঠিক হয়না।
ইয়েস ব্যাংক এর একটা প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
প্রাসঙ্গিকতা হারানোর ঝুঁকি
অনেক কোম্পানি একটা বিশেষ সময়ে বিশেষ পরিস্থিতিতে দারুন ব্যবসা করে এবং মনে হয় যেন তা অপ্রতিরোধ্য। কিন্তু দিনকাল, পরিস্থিতি এবং মানুষের অভ্যাস চির পরিবর্তনশীল। তাই আজ যা প্রাসঙ্গিক কাল তা নাও থাকতে পারে। সময়ের সাথে সাথে যে কোম্পানি নিজেকে বদলাতে পারে সে-ই এই চরম প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে পারে। অন্যথায় একদিনের মহীরুহ একদিন কোথায় হারিয়ে যায় খুঁজেও পাওয়া যায়না। আর এই অপ্রাসঙ্গিকতা স্বাভাবিকভাবেই শেয়ারের দামেও প্রতিফলিত হয়।
নোকিয়া কোম্পানি একদিন মোবাইল ফোনের বাজারে এক নম্বর ছিল। কিন্তু অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের আসন্ন উত্থান তারা আঁচ করতে পারেনি। আর তাই সময়ের নিয়মে অ্যান্ড্রয়েড ফোন বাজারে যত বেড়েছে নোকিয়া ততই অপ্রাসঙ্গিকতার আড়ালে কোথায় যেন হারিয়ে গেছে।
আর নোকিয়ার পতনের এই আঁচ সবথেকে ভালো বুঝেছেন সেই সব শেয়ারহোল্ডাররা যারা এর বাড়বাড়ন্তের সময়ে এর শেয়ার কিনে আশা করেছিলেন এই কোম্পানি চিরকাল এক নম্বরেই থাকবে ও আরও বড় হবে।
মুদ্রাস্ফীতির ঝুঁকি
সারা বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি এখন তুঙ্গে। মুদ্রাস্ফীতি মানে জিনিসপত্রের দাম বাড়া। এদেশ বিদেশ সব জায়গাতেই এখন মানুষের ব্যবহার্য এবং বিভিন্ন কোম্পানির প্রয়োজনীয় সব জিনিসের দামই অনেক চড়া।
বিভিন্ন কারণে মুদ্রাস্ফীতির হার বাড়তে পারে, আর এইরকম পরিস্থিতি যখন হয় তখন স্বাভাবিক কারণেই কোম্পানি চালানোর খরচপাতিও বেড়ে যায় আর তার ফল পড়ে লাভের অংকে। আর সেই কম লাভের অংক যখন কোয়াটারলি বা অ্যানুয়াল রিপোর্টে প্রকাশ পায় তার প্রভাব শেয়ারের দামেও পড়ে।
সুদের হারের ঝুঁকি
রিজার্ভ ব্যাংক বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিস্থিতির ওপর বিচার করে ব্যাংকে জমানোর বা ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার সুদ কত হবে তার একটা গাইডলাইন হিসাবে রেপো রেট প্রকাশ করে। এই রেপো রেটের উপর নির্ভর করেই ব্যাংকগুলো তাদের সুদের হার নির্ধারণ করে।
এইমাত্র যে মুদ্রাস্ফীতির কথা বললাম সেই মুদ্রাস্ফীতি বাড়লে অনেক সময় রেপো রেট বাড়ানো হয় মুদ্রাস্ফীতির হারের উপর নিয়ন্ত্রণ আনতে।
যাই হোক ব্যাংকের ইন্টারেস্ট রেট বাড়ানো হলে যে সমস্ত কোম্পানির ডেট বা লোন অনেক বেশি তাদের সুদ হিসাবে তুলনামূলক অনেক বেশি টাকা শোধ করতে হয়। ফলে তাদের লভ্যাংশে ঘাটতি দেখা যায় এবং শেয়ারের দামে তার প্রভাব পড়ে।
ট্যাক্সের ঝুঁকি
দেশের বাজেটের সময় ইকোনোমির প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে কখনও কখনও বিভিন্ন ক্ষেত্রে ট্যাক্সের হারের পরিবর্তন করা হয় বা অনেক সময় কিছু ক্ষেত্রে নতুন নতুন ট্যাক্স চালু করা হয়।
যে কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা আছে সেই কোম্পানির ব্যবসার ক্ষেত্রে যদি এই ধরনের ট্যাক্সের হারের কোনো পরিবর্তন হয়, তার প্রভাব ব্যবসায় পড়ার অনেক আগেই নতুন ট্যাক্স এর হার ঘোষণা হওয়ার সাথে সাথেই তার প্রভাব সেই কোম্পানির শেয়ারের দামে তথা শেয়ারহোল্ডারের পোর্টফলিওতে পড়ে।
একসময় আইটিসির প্রধান ব্যবসা ছিল সিগারেটের। যখনই সিগারেটের উপরে ট্যাক্স বাড়িয়ে দেওয়া হলো তখনই এই শেয়ারের দাম পড়ে গিয়েছিল।
সরকারি নিয়ম-নীতির ঝুঁকি
শেয়ারবাজারে হাজার হাজার লিস্টেড কোম্পানি আছে। এইসব কোম্পানিগুলো বিভিন্ন সেক্টর যেমন ফার্মা, টেলিকম, এগ্রিকালচার, ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস, এনার্জি, এফএমসিজি, আইটি ইত্যাদির কোনোটা না কোনোটায় পড়ে। এর মধ্যে কোনো কোনো সেক্টরে সরকার বিশেষভাবে জড়িত থাকে।
সরকার এর মধ্যে বিশেষ কোনো সেক্টরে নতুন কোনো নিয়ম-নীতির প্রবর্তন করলে তার প্রভাব ওই সেক্টরের সমস্ত কোম্পানির উপর এবং তাদের শেয়ারের দামেও পড়ে।
রাজনৈতিক ঝুঁকি
কিছু কিছু রাজনৈতিক দল কিছু বিশেষ কারণে কিছু কিছু কোম্পানিকে বেশি পছন্দ করে এবং তারা সরকারে থাকলে তাদের পছন্দের ওইসব কোম্পানিকে বেশি সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে।
ওইসব কোম্পানির ফরে সরকার নীতি নির্ধারণ করে বা ব্যবসা বাড়ানোর জন্য সমস্ত রকম সহযোগিতা সরকারের তরফ থেকে পাওয়া যায়। আর এই পক্ষপাত মূলক সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার জন্য ওইসব কোম্পানিগুলো কম্পিটিশনেও এগিয়ে থাকতে পারে।
কিন্তু নির্বাচনে সরকার বদলে গেলে এবং নতুন সরকারের সাথে একই রকম সম্পর্ক না থাকলে কোম্পানির ব্যবসার উপর বাজে প্রভাব পড়ে ও শেয়ারের দামও পড়ে যায়।
আবার আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক কারণে বিভিন্ন দেশের মধ্যে যদি ট্রেড ওয়ার শুরু হয় বা যদি কোথাও সত্যিকারের যুদ্ধ লেগে যায় তার লহরী প্রভাব সারা বিশ্বের শেয়ার বাজারে পড়ে।
কমোডিটির দামের ঝুঁকি
বিভিন্ন রকম কমোডিটির দামের উপর অনেক কিছুই নির্ভর করে। তেল বা কয়লার দাম বাড়লে এগুলো বিক্রি করা যাদের ব্যবসা তাদের লাভ বাড়ে তাই শেয়ারের দাম বাড়ে। আর উল্টোটা হলে শেয়ারের দাম কমে।
আবার যেসব কোম্পানির কার্যকলাপে এই সমস্ত কমোডিটির দরকার পড়ে কমোডিটির দাম বাড়লে তাদের খরচ বেড়ে যায় এবং শেয়ারের দামে তার বিরূপ প্রভাব পড়ে।
এমনকি কমোডিটির দ্রুত দাম বাড়ার বা কমার সাথে সমগ্র শেয়ার বাজার বা ইনডেক্সের নামার বা ওঠার সম্ভাবনা থাকে।
অ্যাক্ট অফ গড
ইন্সুরেন্সে একটা কথা ব্যবহৃত হয়, অ্যাক্ট অফ গড। মানে বড় কোন অপ্রত্যাশিত ঘটনা যেটা মানুষের কারণে হয়নি বা মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। প্রাকৃতিক বিভিন্ন ঘটনা যেমন ভূমিকম্প, দাবানল, ঝড়, সুনামি ইত্যাদি এর মধ্যে পড়ে। আর বড়সড়ো এ ধরনের ঘটনার প্রভাব শেয়ার বাজার এবং বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের দামেও পড়ে।
শেয়ারহোল্ডার নিজেই একটা ঝুঁকি
শেয়ার কেনার আগে শেয়ার বাজার এবং যে কোম্পানির শেয়ার কিনতে চাওয়া হচ্ছে সে ব্যাপারে সঠিকভাবে বিষদে না জানাটাই একটা বড়ো ঝুঁকি।
তাছাড়া শেয়ার বাজার যখন উপর দিকে ওঠে তখন অতি আত্মবিশ্বাসী হয়ে যতটা বিনিয়োগ করা উচিত তার থেকে বেশি বিনিয়োগ করা বা তাড়াতাড়ি লাভের আশায় অজানা কোন শেয়ারে বিনিয়োগ করাও কম ঝুঁকির নয়। বাজার যত তাড়াতাড়ি উপরে ওঠে পড়ার সময় তার থেকে অনেক বেশি বেগে পড়ে।
আবার বাজার যখন পড়ে তখন ভালো শেয়ারের উপর বিশ্বাস হারানো একটা ঝুঁকি। বাজার যখন পড়ে তখন মনে হয় পড়ার যেন আর শেষ নেই। আর সে সময় অধৈর্য হয়ে নিজের ভালো শেয়ার বিক্রি করে দেওয়াটা বিশাল একটা ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। কারণ শেয়ার বাজার আবার কখন ঘুরে বসবে কেউ জানে না।
লং টার্ম ইনভেস্টিং মানেই হচ্ছে ভালো শেয়ার কিনে লম্বা সময়ের জন্য হোল্ড করে থাকা এবং সাময়িক উত্থান পতন গুলোকে উপেক্ষা করা।
শেষ কথা
ফেসবুকের স্রষ্ঠা মার্ক জাকারবার্গ বলেছিলেন, ‘সব থেকে বড় ঝুঁকি হচ্ছে কোনোরকম ঝুঁকি না নেওয়া।’ জীবনে বড় কিছু করতে চাইলে একটু ঝুঁকি তো নিতেই হবে। হ্যাঁ শেয়ার বাজারের বিনিয়োগে অনেক রকম ঝুঁকি আছে। কিন্তু নিয়ম মত বিনিয়োগে যা পাওয়া যায় তা এই ঝুঁকিগুলোকে ছাপিয়ে যায়। শেয়ার বাজারের ঝুঁকি গুলোকে এড়ানো সম্ভব নয় কিন্তু তার প্রভাব আপনার পোর্টফোলিও-তে কতটা পড়বে, সেটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। কিন্তু কি করে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে? সেটা জানতে চাইলে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের ঝুঁকি কমানোর 10 টি উপায়ের ← ব্যাপারে পড়ে নিতে পারেন। আর এইরকম বিভিন্ন আপডেট পেতে বেল বাটন থেকে নোটিফিকেশন অন করে রাখার অনুরোধ জানাই। ভালো থাকবেন। টা টা।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQs)
কিভাবে শেয়ার কেনা যায়?
কোনও কোম্পানির শেয়ার কিনতে চাইলে প্রথমেই একটা ডিম্যাট কাম ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়। তারপর ওই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে যে কোম্পানির শেয়ার কিনতে চাওয়া হচ্ছে তার নাম খুঁজে অর্ডার প্লেস করতে হয়। অর্ডার এক্সিকিউট হলেই নির্দিষ্ট সময় পরে ওই শেয়ার নিজের ডিম্যাট অ্যাকাউন্টে চলে আসে।
ডিম্যাট ছাড়া শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করা যায়?
হ্যাঁ যায়। আপনি ব্যাংকে গিয়ে ফিক্সড ডিপোজিটের মতোই একটা ফর্ম ফিলাপ করে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারেন কোনও রকম ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট না খুলেই।