ভারতীয় শেয়ার বাজারের কথা উঠলেই সাথে সাথে নিফটি ৫০ -র কথাও চলেই আসে। খবরের কাগজে, টিভিতে, বিভিন্ন ওয়েবসাইটে এই জিনিসটা নিত্যদিন বারে বারে আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে। শেয়ার বাজারের সাথে যারা যুক্ত তাদের এই নিফটি ৫০ ছাড়া এক মুহূর্তও চলে না। অনেকে আবার সরাসরি এর উপর ভিত্তি করেই ট্রেড বা বিনিয়োগ করে থাকেন। কিন্তু কখনও ভেবে দেখেছেন এই নিফটি ৫০ আসলে কী?
চলুন তবে এই নিবন্ধে আমরা এই নিফটি ৫০ -র নাড়ী নক্ষত্র জেনে নিই।
কী এই নিফটি ৫০?
নিফটি ৫০ কে অনেক সময় শুধুমাত্র নিফটি-ও বলা হয়। এই নিফটি কথাটা তৈরি হয়েছে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ বা এনএসই-র এন এবং এর সাথে ৫০ বা ফিফটি-র শেষ অংশ টা জুড়ে [N(SE)+(F)IFTY]।
আর এই নামের মধ্যেই লুকিয়ে আছে এর অন্তর্নিহিত অর্থ। নিফটি বা নিফটি ৫০ ইনডেক্স [FAQ1] হচ্ছে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ বা এনএসই-তে লিস্টেড ভারতের সবথেকে বড় এবং সবথেকে লিকুইড মানে সবথেকে বেশি শেয়ার কেনাবেচা হওয়া ৫০ টা ব্লুচিপ কোম্পানির ফ্রি ফ্লোট মার্কেট ক্যাপ [FAQ2] ওয়েটেজের আনুপাতিক সমাহার। ভারতীয় অর্থনীতির ১৩ টা সেক্টর থেকে নেওয়া ঐ ৫০ টা কোম্পানি হচ্ছে এনএসই তে লিস্টেড মোট ২১০০-র ও বেশি কোম্পানির মধ্যে সেরা ৫০। ঐ কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দামের সামগ্রিক ওঠানামার সাথে সাথেই এই ইনডেক্সও ওঠানামা করে। তাই একে ভারতীয় শেয়ার বাজারের ব্যারোমিটার বা মাপকাঠি ধরে নেওয়া হয়।
এটা ভারতীয় শেয়ার বাজারের দুই ফ্ল্যাগশিপ ইনডেক্স বা সূচকের মধ্যে একটা। এটা বাদে অন্য ইনডেক্সটা হচ্ছে সেন্সেক্স। নিফটি ৫০ ইনডেক্স এনএসই ইন্ডিসেস লিমিটেডের (যার আগে নাম ছিল ইন্ডিয়া ইনডেক্স সার্ভিসেস এন্ড প্রোডাক্টস লিমিটেড) মালিকানাধীন এবং ঐ কোম্পানিই এটা ম্যানেজ করে।
নিফটি ৫০ -র বেস ধরা হয় ১৯৯৫ সালের ৩রা নভেম্বরে ১০০০ থেকে। এবং এর বেস ক্যাপিটাল ২.০৬ ট্রিলিয়ন। এটা চালু হয়েছিল ১৯৯৬ সালের ২২শে এপ্রিলে। তখন থেকে আজ পর্যন্ত এই ইনডেক্স ১৭.৫ গুনের থেকেও বেশি বেড়েছে।
নিফটি ৫০ -র বিভিন্ন কোম্পানি, তাদের সেক্টর ও অনুপাতঃ
কোম্পানি | সেক্টর | ওয়েটেজ / অনুপাত |
---|---|---|
রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড | তেল, গ্যাস ও জ্বালানী | ১০.৫০ |
এইচডিএফসি ব্যাংক লিমিটেড | অর্থনৈতিক পরিষেবা | ৯.২৩ |
আইসিআইসিআই ব্যাংক লিমিটেড | অর্থনৈতিক পরিষেবা | ৭.৮১ |
ইনফোসিস লিমিটেড | তথ্য প্রযুক্তি | ৭.১৩ |
হাউসিং ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স কর্পোরেশন লিমিটেড | অর্থনৈতিক পরিষেবা | ৬.১৬ |
টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস লিমিটেড | তথ্য প্রযুক্তি | ৪.৪৫ |
আইটিসি লিমিটেড | স্বল্প সময়ে ব্যবহার্য ভোগ্যপণ্য | ৪.৩৫ |
কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাংক লিমিটেড | অর্থনৈতিক পরিষেবা | ৩.৩৮ |
লারসেন অ্যান্ড টার্বো লিমিটেড | নির্মাণ | ৩.৩৪ |
অ্যাক্সিস ব্যাংক লিমিটেড | অর্থনৈতিক পরিষেবা | ২.৯৯ |
হিন্দুস্তান ইউনিলিভার লিমিটেড | স্বল্প সময়ে ব্যবহার্য ভোগ্যপণ্য | ২.৮৮ |
স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া | অর্থনৈতিক পরিষেবা | ২.৬৩ |
ভারতি এয়ারটেল লিমিটেড | টেলিযোগাযোগ | ২.৪৩ |
বাজাজ ফাইন্যান্স লিমিটেড | অর্থনৈতিক পরিষেবা | ২.১৩ |
এশিয়ান পেন্টস লিমিটেড | দীর্ঘ সময়ে ব্যবহার্য ভোগ্যপণ্য | ১.৬৭ |
মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা লিমিটেড | অটোমোবাইল | ১.৫৯ |
মারুতি সুজুকি ইন্ডিয়া লিমিটেড | অটোমোবাইল | ১.৫০ |
এইচসিএল টেকনোলজিস লিমিটেড | তথ্য প্রযুক্তি | ১.৪৯ |
সান ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড | স্বাস্থ্যসেবা | ১.৩৫ |
টাইটান কোম্পানি লিমিটেড | দীর্ঘ সময়ে ব্যবহার্য ভোগ্যপণ্য | ১.৩০ |
টাটা স্টিল লিমিটেড | ধাতু ও খনি | ১.১০ |
আলট্রাটেক সিমেন্ট লিমিটেড | নির্মাণ সামগ্রী | ১.১০ |
এনটিপিসি লিমিটেড। | বিদ্যুৎ | ১.০৬ |
টাটা মোটরস লিমিটেড | অটোমোবাইল | ০.৯৯ |
পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড | বিদ্যুৎ | ০.৯৯ |
বাজাজ ফিনসার্ভ লিমিটেড | অর্থনৈতিক পরিষেবা | ০.৯৫ |
ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক লিমিটেড | অর্থনৈতিক পরিষেবা | ০.৯২ |
টেক মাহিন্দ্রা লিমিটেড | তথ্য প্রযুক্তি | ০.৯০ |
নেসলে ইন্ডিয়া লিমিটেড | স্বল্প সময়ে ব্যবহার্য ভোগ্যপণ্য | ০.৮৭ |
জেএসডাব্লু স্টিল লিমিটেড | ধাতু ও খনি | ০.৮২ |
গ্রাসিম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড | নির্মাণ সামগ্রী | ০.৭৮ |
অয়েল এন্ড ন্যাচারাল গ্যাস কর্পোরেশন লিমিটেড | তেল, গ্যাস ও জ্বালানী | ০.৭৮ |
হিন্ডালকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড | ধাতু ও খনি | ০.৭৬ |
উইপ্রো লিমিটেড | তথ্য প্রযুক্তি | ০.৭৫ |
ডক্টর রেড্ডিস ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড | স্বাস্থ্যসেবা | ০.৬৯ |
ব্রিটানিয়া ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড | ভোগ্যপণ্য | ০.৬৯ |
এসবিআই লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড | অর্থনৈতিক পরিষেবা | ০.৬৬ |
সিপলা লিমিটেড | স্বাস্থ্যসেবা | ০.৬৪ |
এইচডিএফসি লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড | অর্থনৈতিক পরিষেবা | ০.৬৩ |
কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড | তেল, গ্যাস ও জ্বালানী | ০.৫৯ |
আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোন লিমিটেড | পরিষেবা | ০.৫৯ |
অ্যাপোলো হসপিটালস এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড | স্বাস্থ্যসেবা | ০.৫৯ |
ইচার মোটরস লিমিটেড | অটোমোবাইল | ০.৫৭ |
টাটা কনজিউমার প্রোডাক্টস লিমিটেড | স্বল্প সময়ে ব্যবহার্য ভোগ্যপণ্য | ০.৫৭ |
বাজাজ অটো লিমিটেড | অটোমোবাইল | ০.৫৪ |
আদানি এন্টারপ্রাইজেস লিমিটেড | ধাতু ও খনি | ০.৪৯ |
ইউপিএল লিমিটেড | রাসায়নিক | ০.৪৮ |
ডিভিস ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড | স্বাস্থ্যসেবা | ০.৪৭ |
হিরো মোটোকর্প লিমিটেড | অটোমোবাইল | ০.৪১ |
ভারত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেড | তেল, গ্যাস ও জ্বালানী | ০.৪১ |
এই ইনডেক্সে কোনো কোম্পানির অন্তর্ভুক্তির শর্তঃ
- কোম্পানিটা ভারতীয় হতে হবে এবং এনএসই তে লিস্টেড হতে হবে।
- কোম্পানির শেয়ারে উচ্চ লিকুইডিটি থাকতে হবে। মানে সেই কোম্পানির শেয়ার যেন প্রচুর পরিমাণে কেনাবেচা হয়।
- ছয় মাসের লিস্টিং হিস্ট্রি থাকতে হবে, তবে নতুন আইপিও হলে এবং অন্যান্য শর্ত পূরণ করলে তিন মাসের লিস্টিং হিস্ট্রি হলেও চলবে।
- ফিউচার ও অপশন বিভাগে ট্রেডিং এর জন্য উপলব্ধ হতে হবে।
- বিগত ছয় মাসে কোম্পানিটার ট্রেডিং ফ্রিকোয়েন্সি ১০০% হতে হবে।
- কোম্পানিটার গড় ফ্রি ফ্লোট মার্কেট ক্যাপিটাল ইনডেক্সের সব থেকে ছোট কোম্পানির থেকে অন্তত দেড় গুণ হতে হবে।
- যেসব শেয়ারের ডিফারেন্সিয়াল ভোটিং রাইট থাকে সেগুলোও এই ইনডেক্সে অন্তর্ভুক্তির জন্য যোগ্য।
প্রতি ছয় মাস অন্তর নিফটি ৫০ -র অন্তর্গত কোম্পানির তালিকার পুনর্মূল্যায়ন করা হয় এবং তখনকার বাজারের স্থিতি অনুযায়ী প্রয়োজন পড়লে রিব্যালান্সিং করা হয় এবং কোনো কোম্পানি সেসময়ে এতে অন্তর্ভুক্তির শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হলে বা আরো ভালো বিকল্প উপলব্ধ হলে বাদ পড়ে এবং তার বদলে শর্ত পূরণ করা অন্য ভালো বিকল্প কোম্পানিকে এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ভালো বিকল্প উপলব্ধির কারনে এক বছরে সব থেকে বেশি ৫ বার এধরণের প্রতিস্থাপন হতে পারে।
নিফটি ৫০ ইনডেক্সে কিভাবে বিনিয়োগ বা ট্রেড করা যায়?
সরাসরি ইনডেক্সে বিনিয়োগ বা ট্রেড করা যায় না। তবে ইনডেক্সে বা ইনডেক্স অনুযায়ী বিনিয়োগ বা ট্রেড করা যেতে পারে নিম্নলিখিত উপায়ে…
১। সরাসরি ইনডেক্সের শেয়ারগুলো কিনে
এই ইনডেক্সে যে যে শেয়ারগুলো যত যত অনুপাতে আছে সেই একই অনুপাতে সেই সমস্ত শেয়ারগুলো সরাসরি কেনার মাধ্যমে এই ইনডেক্সে বিনিয়োগ করা যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে বেশ মোটা ক্যাপিটাল প্রয়োজন পড়ে এবং সময়ে সময়ে এতে যে রি-ব্যালেন্সিং হয় তা অনুযায়ী নিজের পোর্টফোলিও রি-ব্যালেন্সিং করা খুবই ঝক্কির ব্যাপার হয়। তাই দ্বিতীয় উপায় ফলো করা যেতে পারে।
২। ইনডেক্স ইটিএফ বা ইনডেক্স মিউচুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে বিনিয়োগ করে
এই ফান্ডগুলো ইনডেক্সের শেয়ারের বাস্কেটেই বিনিয়োগ করে এবং বিনিয়োগকারীদের ইউনিটের মাধ্যমে খুব কম ক্যাপিটালে বিনিয়োগ করার সুযোগ দেয়। এ ব্যাপারে বিশদে জানতে এই লিংকে যেতে পারেন।
৩। ইনডেক্স ডেরিভেটিভ-এ ট্রেড করে
নিফটি ফিউচার ও নিফটি অপশনে লং টার্মের জন্য বিনিয়োগ করা যায় না, তবে শর্ট টার্মে ট্রেড করতে এই ইন্সট্রুমেন্ট গুলো ব্যবহার করা যেতে পারে।
নিফটি ৫০ -র বিগত বছরের রিটার্ন
শেয়ার বাজার এমন একটা জায়গা যেখানে শেয়ারের দামের উত্থান ও পতন লেগেই থাকে। বিগত বছরগুলোতে এই ইনডেক্স শেয়ার বাজারের ছোট বড় বিভিন্ন হারে ওঠা নামার সাক্ষী থেকেছে। এমন বছর গেছে যখন এক বছরে ইনডেক্স ৫০% এরও বেশি পড়েছে আবার এমনও বছর গেছে যখন এই ইনডেক্স ৭০% এর বেশি চড়েওছে। কিন্তু লং টার্মের পরিপ্রেক্ষিতে দেখলে দেখা যায় বিগত ২২ বছরে এই ইনডেক্স গড়ে বছরে ১৫% রিটার্ন দিয়েছে।
বছর | রিটার্নের হার | বছর | রিটার্নের হার |
---|---|---|---|
২০০০ | -১৪.৬৫ | ২০১২ | ২৭.৭ |
২০০১ | -১৬.১৮ | ২০১৩ | ৬.৭৬ |
২০০২ | ৩.২৫ | ২০১৪ | ৩১.৩৯ |
২০০৩ | ৭১.৯ | ২০১৫ | -৪.০৬ |
২০০৪ | ১০.৬৮ | ২০১৬ | ৩.০১ |
২০০৫ | ৩৬.৩৪ | ২০১৭ | ২৮.৬৫ |
২০০৬ | ৩৯.৮৩ | ২০১৮ | ৩.১৫ |
২০০৭ | ৫৪.৭৭ | ২০১৯ | ১২.০২ |
২০০৮ | -৫১.৭৯ | ২০২০ | ১৪.১৭ |
২০০৯ | ৭৫.৭৬ | ২০২১ | ২৪.১২ |
২০১০ | ১৭.৯৫ | ২০২২ | ৪.৩২ |
২০১১ | -২৪.৬২ |
এই ইনডেক্স সংক্রান্ত বিশেষ কিছু তথ্যঃ
- এনএসই-তে যত কোম্পানি লিস্টেড আছে সেই সমস্ত কোম্পানির ফ্রি ফ্লোট মার্কেট ক্যাপের 62% কে এই ইনডেক্স প্রতিনিধিত্ব করে।
- বিগত ছয় মাসে এই ইনডেক্সের শেয়ারগুলোয় ট্রেডের ভ্যালু এনএসই-র সমস্ত শেয়ারের ট্রেডের ভ্যালুর ৪১%।
- ১২ টা কোম্পানি এই ইনডেক্স তৈরির সময় থেকে এখনো পর্যন্ত এই ইনডেক্সের অংশ হয়ে আছে।
- বিগত ২৫ বছরে এই ইনডেক্সে মোট ১০১ টা কোম্পানির অন্তর্ভুক্তি হয়েছে।
- এই ইনডেক্সের ডেরিভেটিভ ভারতের বাইরে তিনটে এক্সচেঞ্জে ট্রেড করা হয়।
শেষ কথাঃ
আশা করি এই নিবন্ধে নিফটি ৫০ সম্পর্কে আপনার বেশ একটা পরিষ্কার ধারণা তৈরি হয়েছে। ভারতীয় শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে চাইলে আপনার জানার শুরু এটা থেকে হতে পারে। তবে নিফটি সম্পর্কে এইটুকু জানা মানেই ছুটে গিয়ে এই সম্পর্কিত কোনো ফান্ডে বা শেয়ারে বিনিয়োগ করা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। শেয়ার বাজার একটা সমুদ্রের মতো। এখানে জানার কোনও শেষ নেই। এখান থেকে আপনার নিজস্ব রিসার্চ শুরু করে আরও বিষদে জেনে শিখে তবেই বিনিয়োগের কথা ভাবা যেতে পারে।
তাহলে এখানেই শেষ করি। ভালো থাকবেন। টা টা 🙂
সুত্রঃ এনএসই
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQs)
ইনডেক্স কী?
শেয়ার বাজারে কোনও পরিবর্তনের মাপ হচ্ছে ইনডেক্স। এটার সাহায্যে পুরো শেয়ার বাজারের কিংবা এর কোনও বিশেষ অংশের স্থিতি বোঝা যায়।
একটা বিশেষ কোনও ইনডেক্স তৈরি করার জন্য বিভিন্ন ক্রাইটেরিয়া যেমন সেক্টর, মার্কেট ক্যাপ ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে কিছু শেয়ার বেছে নিয়ে সেই বাস্কেটের অন্তর্নিহিত ভ্যালুর উপর বিশেষ গাণিতিক সুত্র প্রয়োগ করে ইনডেক্স তৈরি করা হয়।
ফ্রি ফ্লোট মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন কী?
কোনো একটা কোম্পানির যতগুলো শেয়ার সাধারণ মানুষের বেচাকেনা বা ট্রেডিং এর জন্য ফ্রি ভাবে উপলব্ধ থাকে তার মোট মূল্যকে ফ্রি ফ্লোট মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন বলে। এটা হল কোম্পানিটার একটা শেয়ারের দামের সঙ্গে ফ্রি ফ্লোর্ট শেয়ারের মোট সংখ্যার গুনফল।
উদাহরণস্বরূপ ধরা যাক কোন কোম্পানির একটা শেয়ারের দাম ১০ টাকা এবং সেই কোম্পানির মোট শেয়ারের সংখ্যা ১০০০০ টা। এরমধ্যে ৮০০০ শেয়ার বাজারে বেচাকানোর জন্য ফ্রি ভাবে উপলব্ধ রয়েছে এবং ২০০০ শেয়ার কোম্পানি নিজের কাছে ধরে রেখেছে। তাহলে কোম্পানিটার ফ্রি ফ্লোর্ট মার্কেট ক্যাপিটেশন হলো ৮০০০ × ১০ = ৮০০০০।
নিফটি ৫০ -তে কোন শেয়ারের ওয়েটেজ বা অনুপাত সবথেকে বেশি?
রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শেয়ারের, কারণ এর ফ্রি ফ্লোট মার্কেট ক্যাপ সবথেকে বেশি। বর্তমানে এর ওয়েটেজ ১০.৫%।
নিফটি তে কোন সেক্টরের ওয়েটেজ সবথেকে বেশি?
অর্থনৈতিক পরিষেবা সেক্টরের। এর ওয়েটেজ এখন ৩৭.৪০%।
নিফটি ৫০ কেনা যায়?
এটা একটা ইনডেক্স। সরাসরি কেনা যায়না। তবে এর মিউচুয়াল ফান্ড বা ইটিএফ এর ইউনিট কেনা যায়।