এই ইন্টারনেটের যুগে অনলাইনে কতশত কাজের সাথে সাথে আমাদের অনেকেরই কেনাকাটার বেশ খানিকটা অংশ আমরা অনলাইনেই করতে শুরু করেছি। আর করবোনাই বা কেন? অনলাইনে কেনাকাটায় কত্ত সুবিধা! কোথাও যাওয়ার দরকার নেই, বাড়িতেই আরাম করে শুয়ে বসে মোবাইলে বা কম্পিউটারে ব্রাউজার বা অ্যাপ খোলো, প্রডাক্ট সার্চ করো, প্রচুর প্রচুর বিকল্পের মধ্যে নিজের পছন্দ বেছে নাও, তারপর বাড়িতে বসেই সেই প্রোডাক্টের ডেলিভারি নাও। আবার পছন্দ না হলে বা কিছু সমস্যা হলে কোন আলাদা খরচ ছাড়াই সেই প্রোডাক্ট এক্সচেঞ্জ, এমনকি রিটার্ন করে পুরো রিফান্ড নিয়ে নাও।
এত কিছু সুবিধার পরেও একটা সবথেকে বড় সুবিধা হচ্ছে অবিশ্বাস্য ছাড়ে ব্র্যান্ডেড জিনিস কিনতে চাইলে অ্যামাজনের মতো অনলাইন মার্কেটপ্লেসের আর কোন জুড়ি নেই। এখান থেকে কেনাকাটা করা মানে একেবারে সোনায় সোহাগা! আর এই আর্টিকেলে তুমি জানতে পারবে কি কি উপায় বা ট্রিকস অনুসরণ করলে তুমি অ্যামাজন থেকে অবিশ্বাস্য ছাড়ে দারুন দারুন গুণমানের ব্র্যান্ডেড জিনিসপত্র খুঁজে পাবে, কিনতে পারবে এবং বেশ কিছু টাকা বাঁচাতে পারবে।
দি অ্যামাজনঃ
অ্যামাজন আফ্রিকার সবথেকে বড় নদীর নাম। আবার এটা বিশ্বের সবথেকে ধনী দের মধ্যে একজন, জেফ বেজোসের তৈরি পৃথিবীর সবথেকে বড় অনলাইন বাজারের নামও। আমেরিকায় প্রথম এর গোড়াপত্তন হলেও এখন পৃথিবীর প্রত্যেকটি কোনায় অ্যামাজনের বিভিন্ন শাখা তাদের জাল বিস্তার করেছে। ভারতবর্ষে অ্যামাজনের শাখাটি হচ্ছে amazon.in। আর এই amazon.in ভারতের সবথেকে বড় দুটো ই-কমার্স মারকেটপ্লেস বা অনলাইন বাজারের মধ্যে একটি। অন্যটি হচ্ছে flipkart.com ।
এখানে একটা কথা না বললে চলে না, flipkart.com ভারতে তৈরি কিন্তু এটা তৈরি হয়েছিল amazon.com এর চলা পথ অনুসরণ করেই। আর ফ্লিপকার্ট তৈরি হয়েছিল যে ভারতীয়দের হাত ধরে তারা অ্যামাজনেরই প্রাক্তন কর্মচারী ছিল। আর একটা কথা, এই যে সারা বিশ্বব্যাপী অ্যামাজনের এত বাড়বাড়ন্ত এটার পিছনে আমার মনে হয় সবথেকে বড় কারণ হচ্ছে এর মূলমন্ত্র, ‘কাস্টমার ইজ কিং’। হ্যাঁ বহু বছর ব্যাপী অ্যামাজনে কেনাকাটা করে ও এর পারফরম্যান্স এবং এর সঙ্গে যুক্ত কর্মচারীদের ব্যবহারে আমারও নিজেকে রাজা-ই মনে হয়।
অ্যামাজন মার্কেটপ্লেসে কি হয়?
Amazon.com বা আমাদের amazon.in আসলে একটা অনলাইন মার্কেটপ্লেস যা আমাদের অফলাইনের সাধারণ বাজারের মতই। সেই বাজারে অ্যামাজন রিং-মাস্টার হলেও যে কেউ এখানে যা কিছু বিক্রি করতে পারে আর অ্যামাজন সেই বিক্রেতা এবং ক্রেতার বেচা-কেনায় ফেসিলিটেশন করে, মানে প্রোডাক্ট শোকেস করার বা খুঁজে পাওয়ার জন্য প্ল্যাটফর্ম প্রদান করে, তার সাথে পেমেন্ট, ডেলিভারি, রিটার্ন, রিফান্ড ইত্যাদি সব কিছুর ব্যবস্থাপনা করে সাহায্য করে। আর এই সুবিধা দেওয়ার বদলে বিক্রেতা থেকে অ্যামাজন কিছু কমিশন আদায় করে। তবে এই মার্কেটপ্লেসে অ্যামাজনের নিজস্ব প্রডাক্ট এবং নিজস্ব বা ‘অগ্রাধিকার দেওয়া’ বিক্রেতাও বর্তমান।
অ্যামাজন এত ছাড় দেয় কি করে?
বিশাল ছাড়ে প্রোডাক্ট কেনার উপায় জানার আগে এই বিষয়টা জানা এবং বোঝার দরকার আছে। একটা ব্যাপারে খটকা লাগা অস্বাভাবিক কিছু নয়, অ্যামাজন এত ছাড় দেয় কিভাবে? কখনও তো দেখা যায় ব্র্যান্ডের নিজের শোরুম বা ওয়েবসাইটের থেকে তাদেরই প্রোডাক্ট এখানে কম দামে পাওয়া যায়। তো এখানে পাওয়া প্রোডাক্ট ডিফেক্টিভ বা নকল নয় তো? এব্যাপারে বলে রাখতেই হয় কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে এখানে সাধারণত ডিফেক্টিভ বা নকল জিনিস পাওয়ার ভয় প্রায় নেই। আর কোনও সমস্যা হলে এক্সচেঞ্জ বা রিটার্ন-এর অপশন তো আছেই। একটা ব্যপার ভুলে গেলে চলবেনা অ্যামাজনের কাছে তুমি-আমি, মানে কাস্টমার হচ্ছে কিং বা রাজা। আর রাজার যাতে কোনো সমস্যা না হয় তার জন্য ওরা সবসময় সচেষ্ট থাকে।
তো যদি এটা মার্কেটপ্লেস-ই হয় আর এখানে ছোট-বড় বিভিন্ন থার্ড পার্টি বিক্রেতারা প্রোডাক্ট বিক্রি করে তাহলে অ্যামাজন এত ছাড় কিভাবে দেয়। একটু আগেই বলেছিলাম সরাসরি এর নিজস্ব কোন সেলার না থাকলেও prioritized seller বা অগ্রাধিকার দেওয়া বিক্রেতা কিন্তু থাকে। এছাড়াও অনেক বিক্রেতার সাথে অনেক রকমের চুক্তি থাকে। আর শুধু তাই না, অ্যামাজন সেলার দের সাথে ব্র্যান্ডের সরাসরি যোগাযোগ বা বিশেষ ডিল এর ব্যাবস্থাও করে দেয়। তাই যদিও এটা মার্কেটপ্লেস তবুও এখানে পাওয়া প্রোডাক্ট-এর দাম কেমন হবে তার উপর অ্যামাজনের ভালোই নিয়ন্ত্রণ থাকে।
যেহেতু এখানে প্রচুর সংখ্যায় বিক্রি হয়, তাই ব্র্যান্ড অনেক কম লাভে অ্যামাজনের বিক্রেতাদের প্রোডাক্ট সরবরাহ করতে পারে। আর একইভাবে বিক্রেতারাও বিক্রি প্রচুর হওয়ার জন্য কম মার্জিনেই বিক্রি করতে পারে। এগুলো কিন্তু অফলাইনের ছোটো ছোটো দোকান দ্বারা করা সম্ভব না। তাই অ্যামাজনে প্রচুর ছাড় দেওয়ার প্রচুর সুযোগ!
অ্যামাজনে প্রোডাক্ট-এর দাম বাড়া-কমাঃ
কম মার্জিন, বেশি ছাড়ের ক্ষমতার উপরে আছে আবার অ্যামাজনের অটোমেটিক অ্যালগরিদম দিয়ে দাম নিয়ন্ত্রন। একটা ব্যাপার খেয়াল করলে দেখা যায় যেকোনো প্রোডাক্ট-এর দাম এখানে অনবরত ওঠানামা করে। তো এখানে যে লক্ষ লক্ষ প্রোডাক্ট পাওয়া যায় তত প্রোডাক্ট-এর দাম ম্যানুয়ালি তো আর এভাবে বারে বারে বাড়ানো কমানো যায় না! তাই অ্যামাজনের অ্যালগরিদম নিজে থেকেই ইনস্ট্রাকশন মত কখনও দাম বাড়িয়ে কখনও কমিয়ে দেয়।
যেমন শেয়ার বাজারে শেয়ারের দাম ওঠানামা করে তেমনই এখানেও জিনিসপত্রের দাম বাড়ে কমে। তবে শেয়ার বাজারের উল্টো প্রক্রিয়ায় দাম কমিয়ে ডিম্যান্ড তথা বিক্রি বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়, আর বিক্রি বেড়ে গেলে আবার দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়। আর বেশি বিক্রির সাথে আবার অ্যামাজনের সার্চ রেজাল্টের উপরের দিকে থাকার সম্পর্কও আছে। তাছাড়া এভাবে দাম কমিয়ে-বাড়িয়ে ক্রেতাদের মনে একটা FOMO বা Fear Of Missing Out অবস্থা তৈরি করা হয় যাতে কাস্টমার Impulse Buy করতে উদ্যত হয়।
তাই বিক্রেতাদের জন্য সময়ে সময়ে যেনতেন প্রকারেণ দামের তারতম্য করার বা কৌশলে বিক্রি বাড়াবার প্রয়োজন আছে আরও বিক্রি বাড়ানোর জন্য। তবে দাম বেশি কমের মধ্যে গড় দাম টা লাভের অঙ্ক যোগ করেই করা হয়। তাই অ্যামাজন যদি কয়েকটা সেল লসেও করে, পরের কয়েকটা সেলে বেশি দাম রেখে একটু বেশি লাভ করে নিয়ে ম্যানেজ করে নেয়!
তাহলে যেটা দাঁড়াচ্ছে, শেয়ার বাজারের মতই, তোমায় সব থেকে বেশি ছাড়ে মাল কিনতে হলে তখনই কিনতে হবে যখন যে প্রোডাক্ট টা কিনতে চাইছ সেটার দাম নিম্নমুখী। তাহলেই তুমি হবে লাভবান আর উল্টোটা হলে, মানে দাম যখন বেশি তখন কিনলে তোমার লস।
বা অন্যভাবে বললে যেটা হয় সেটা হচ্ছে, কি ধরনের প্রোডাক্ট বা জিনিস তুমি কিনতে চাইছ সেই ধরনের প্রোডাক্ট সার্চ করে সার্চ রেজাল্টের আইটেম গুলোর মধ্যে থেকে তোমার সেটা কেনা উচিৎ যেটার দাম তখন কম চলছে। তবেই তুমি লাভবান হবে। তবে এক্ষেত্রে তোমার নিজের পছন্দ টা ফ্লেক্সিবেল হতে হবে।
আর পছন্দ ফিক্সড হলে হাতে একটু সময় থাকতে হবে। মানে তোমায় অপেক্ষা করতে হবে সেই মুহূর্তের জন্য যখন প্রোডাক্ট টার দাম কমের দিকে থাকবে।
কখন প্রোডাক্ট-এর দাম কম চলছে কিকরে বোঝা যাবে?
এমনি তে বিশেষ বিশেষ সেল গুলোর সময় অনেক জিনিসের দাম কম থাকে। তবে যেহেতু সবকিছুর দামই অনবরত ওঠানামা করে তাই দেখা যায় সেলের সময় বাদেও কখনও এই জিনিসটা তো কখনও ওই জিনিসটা ঘুরেফিরে অন্য সময়েও কম দামে আসে। কখনো কখনো আমি এও দেখেছি যে কিছু কিছু জিনিসে সেলের সময় যে ছাড় থাকে এমনি সময়ে তার থেকেও বেশি ছাড় পাওয়া যায়। তো তুমি যখন কিনতে চাইছ সেই সময়ে তুমি যে ধরনের প্রোডাক্ট কিনতে চাও সেই ধরনের কোন কোনটায় ছাড় বেশি চলছে সেটা বের করা খুবই সহজ।
প্রোডাক্ট খোঁজাঃ
প্রথমত অ্যামাজনে তোমায় তোমার পছন্দের প্রোডাক্টের নাম বা ক্যাটেগরি দিয়ে সার্চ করতে হবে অথবা ব্রাউজ করেও তোমার পছন্দের প্রোডাক্টের ক্যাটেগরিতে যেতে পারো। ব্রাউজ করলে যে কোন ক্যাটাগরিতে যাওয়ার পর মোবাইলের ক্ষেত্রে নিচের দিকে স্ক্রল করে ‘See all results’-এ যেতে হবে।
ফিল্টার অ্যাপ্লাই করাঃ
তার পরে যেতে হবে ‘Filters’ অপশনে।
তারপর ‘Sort by’ তে গিয়ে ‘Price: Low to High’ সিলেক্ট করতে হবে। তাহলেই সেসময়ে বেশি ছাড় থেকে কম ছাড় এভাবে প্রোডাক্ট গুলো সাজানো হয়ে যাবে।
এরপর ভালো কোয়ালিটির ব্র্যান্ডেড জিনিস পাওয়ার জন্য ‘Brands’ অপশনে গিয়ে চেনা পরিচিত ভালো ব্র্যান্ড গুলো বেছে নিতে হবে বা ফ্যাশন এর আইটেম হলে ‘Top Brands’ সিলেক্ট করে ‘Show results’ করা যেতে পারে। ‘Top Brands’ মানে অ্যামাজনের হিসেবে ভালো ব্র্যান্ড গুলো। এই অপশনে ফিল্টারের ফলাফল খারাপ হয় না।
আরও একটা ফিল্টার এর অপশন ব্যবহার করা যায়, সেটা হচ্ছে ‘Price and Deals’. এখানে ‘Today’s Deals’ এ গিয়ে সেদিনের কিছু স্পেশাল ডিল খুঁজে পাওয়া যেতে পারে বা ‘Discount’ -এ গিয়ে ছাড় এর পারসেন্টেজ বা পরিমাণ সিলেক্ট করেও সেইমত রেজাল্ট পাওয়া যেতে পারে।
সব ‘Filters’ অপশন মনের মত নেওয়া হয়ে গেলে প্রোডাক্ট লিস্ট স্ক্রল করে করে নিজের পছন্দমত জিনিসটা খুঁজে নিতে হবে।
প্রোডাক্ট পেজ থেকে আরও ছাড়ের সন্ধানঃ
প্রোডাক্ট পছন্দ হলে এর পরের পার্ট হচ্ছে প্রতি প্রোডাক্টের পেজ-এ আরও কি অফার আছে সেটা খেয়াল করা। এই সমস্ত ছাড় বা ক্যাশব্যাক যে দাম দেখা যায় তার উপরে প্রযোজ্য হয়।
লাইটনিং ডিলঃ
কোনও কোনও প্রোডাক্ট এর পেজ ওপেন করলেই একটা ‘Lightning deal’ বলে সেকশন দেখা যেতে পারে। এই ধরনের ডিল-এ সাধারণত প্রোডাক্ট এর সংখ্যা সীমিত থাকে এবং কার্টে অ্যাড করার পর 15 মিনিটের মধ্যে চেক আউট করে পেমেন্ট করে দিতে হয়। তাই এর সুবিধা নিতে হলে তাড়াতাড়ি অর্ডার করে দিতে হবে।
কুপন
কোনও কোনও প্রোডাক্ট-এর আবার 5%, 10% ইত্যাদি বিভিন্ন রেট এর কুপন থাকে যা প্রোডাক্ট পেজে দেখা যায় এবং টিকবক্সে টিক দিয়েই ওই কুপন অ্যাড করা যায়। এছাড়া কার্টেও কুপন অ্যাড করার অপশন থাকে। অ্যাড করে নিলে চেক আউট করার সময় দাম কমে যায়।
ক্যাশব্যাক
বিশেষ কিছু শর্তে বা বিশেষ কিছু সময়ে রিওয়ার্ডস এর মাধ্যমে কিছু কিছু ক্যাশব্যাক পাওয়া যায়। আবার অ্যামাজন পে আই সি আই সি আই ক্রেডিট কার্ড এর মাধ্যমে সবসময় যেকোনো প্রোডাক্ট এর উপর 5% ক্যাশব্যাক পাওয়া যেতে পারে।
বাই মোর সেভ মোর
আরও থাকে বাই মোর সেভ মোর অফার। এটিও কিছু কিছু প্রোডাক্ট-এর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এর মাধ্যমে এক প্রোডাক্ট একের বেশি অর্ডার করলে বা এক প্রোডাক্ট-এর সাথে বিশেষ লিস্ট থেকে আরও কিছু প্রোডাক্ট অ্যাড / পেয়ার করলে প্রতি এক্সট্রা আইটেম-এর জন্য 30 টাকা পর্যন্ত ক্যশব্যাক পাওয়া যায়। কোনও প্রোডাক্ট-এর সাথে আর কোন প্রোডাক্ট পেয়ার করতে হবে তার লিস্ট এই অফারের উপর ট্যাপ করেই দেখা যায়।
আবার কখনও কখনও কোনও কোনও সেলার এক ধরনের বাই মোর সেভ মোর অফার দেয় আর এলিজিবেল প্রোডাক্ট এর লিস্ট থেকে একসাথে বেশি আইটেম কিনলে এক্সট্রা ছাড় পাওয়া যায়। এধরনের প্রোডাক্ট লিস্ট-ও ওই অফারের উপর ট্যাপ করলেই দেখতে পাওয়া যায়।
সাবস্ক্রাইব অ্যান্ড সেভ
কিছু কিছু ধরনের আইটেম যেমন গ্রসারি, কস্মেটিক্স, বেবি প্রোডাক্ট ইত্যাদির ক্ষেত্রে আবার কখনও কখনও সাবস্ক্রাইব অ্যান্ড সেভ অফার থাকে। যে প্রোডাক্ট গুলোতে এই অফার থাকে সেগুলোকে কার্টে অ্যাড করার পর সাবস্ক্রাইব অপশন টা অন করে নিলে এক্সট্রা 5% ছাড় পাওয়া যায়। আর পরে প্রয়োজন না হলে সাবস্ক্রাইব অ্যান্ড সেভ সেটিংস্ থেকে সাবস্ক্রিপশন টা ডিলিট করে দিলেই ঝামেলা শেষ।
সব অফার দেখে ঠিক মত প্রোডাক্ট কার্টে অ্যাড করার পর আসে পেমেন্ট এর এক্সট্রা ছাড়ের পালা।
পেমেন্ট বা ব্যাংক অফার
অ্যামাজন পে আই সি আই সি আই ক্রেডিট কার্ড এর অলটাইম 5% ক্যাশব্যাকের কথা আগেই বলেছি। এছাড়াও বহু ব্যাঙ্কের বহুরকম ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডে 10% পর্যন্ত ইনস্ট্যান্ট ছাড় থাকে। এছাড়া কখনও UPI বা অ্যামাজন পে ল্যাটার-এও ক্যাশব্যাক এর অফার থাকে। তবে বাঙ্কের ওই 10% এর পরেও বাঙ্কের তরফ থেকে আরও একটু ছাড় পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু সেটা পরে কখনও বলব।
দেরীতে ডেলিভারির ক্যাশব্যাক
কখনও কখনও আবার কার্টে প্রোডাক্ট অ্যাড করে চেক আউট করার মাঝে যখন ডেলিভারি অপশন গুলো দেখায়, তখন স্লো ডেলিভারি অপশন সিলেক্ট করলে 25 টাকা ক্যাশব্যাক এর অফার প্রভাইড করে।
অর্ডার প্লেস এর আগে ক্যশব্যাক চেক করাঃ
পেমেন্ট করে অর্ডার ফাইনাল করার ঠিক আগের পেজে দেখিয়ে দেয় কোন অর্ডারে কত ক্যশব্যাক আসবে। ফাইনাল পেমেন্ট করার আগে এখানে একবার ক্রসচেক করে নেওয়া ভালো।
Deals and Savings সেকশনঃ
আমি এতক্ষন যা যা বলছি সবই প্রোডাক্ট খোঁজার পরের কথা। কিন্তু প্রোডাক্ট খোঁজার আগে অ্যামাজন অ্যাপে ‘Deals and Savings’ সেকশন টা চেক করে নেওয়া যেতে পারে। অ্যামাজন অ্যাপে 3লাইন বাটন থেকে ‘Deals and Savings’ সেকশনে যাওয়া যায়। আর এখান থেকেই ‘Today’s Deals’, ‘Rewards’ বা ‘Amazon Coupons’ এর পেজে যাওয়া যায় আর একই জায়গায় ওই জিনিসগুলো চেক করে নেওয়া যায়।
Today’s Deals
সময় বা দিন বিশেষে ‘limited time deal’ , ‘Deal of the day’ এবং ‘Lightning deal’ এর ছাড় থাকে বহু প্রোডাক্ট এর উপর আর সেই প্রোডাক্টগুলো এই জায়গায় খুঁজে নেওয়া যায়।
Rewards
Rewards সেকশনে গিয়ে কি কি Shopping Rewards অ্যাভেলেবেল আছে সেগুলো চেক করে কালেক্ট করে নেওয়া যেতে পারে। বিভিন্ন রকম Rewards কখনও অ্যামাজনে করা ট্রানজাকশন থেকে পাওয়া যায় আবার কখনো বা অ্যামাজন থেকে নিজে নিজেই প্রোভাইড করে।
Amazon Coupons
কুপনের কথা আগেও বলেছি। এই জায়গায় অ্যামাজনে যে সমস্ত প্রোডাক্ট এর উপর কুপন এভেলেবেল আছে সেই সমস্ত প্রোডাক্ট কে এক জায়গায় দেখে নেওয়া যায়।
চয়েস ফিক্সড হলে কি করনীয়?
এখন পর্যন্ত যা যা বলেছি সব কিছু সুবিধা ঠিকঠাক ভাবে নিতে গেলে চয়েস টা ফ্লেক্সিবেল হওয়া প্রয়োজন। চয়েস যদি ফিক্সড বা নির্দিষ্ট হয় সেক্ষেত্রে যেটা করনীয় সেটা হচ্ছে পছন্দের জিনিসটার উপর নজর রাখা। মাঝে মাঝেই খুলে দেখতে হবে সেটার দাম কতটা ওঠানামা করে। এভাবে সেটার মিনিমাম আর ম্যাক্সিমাম দাম কেমন চলে সেই সম্পর্কে একটা আইডিয়া তৈরি হয়ে যাবে। এই দাম এর উপর নজরদারি সহজে করতে চাইলে পছন্দের প্রোডাক্ট গুলো কার্টে অ্যাড করে তারপর ‘Save for later’ করে রাখতে হবে। তাহলেই এর পর যখনই কার্ট খোলা হবে তখন কোন প্রোডাক্ট এর দাম কখন কত বেড়েছে বা কমেছে সেটা কার্টের উপরে ‘Messages about items in your cart’ বলে দেখিয়ে দেবে। আর এমনিতে বিভিন্ন সেলের সময় অনেকটা ছাড় তো পাওয়া যায় ই।
আমি এভাবে দাম এর উপর নজর রেখে LG-র 32” এর নীচের মনিটর টা সব ছাড় টার দেওয়ার পর 19000-এ পেয়েছিলাম। ওটার MRP ছিল 45000 টাকা আর তখন দাম নেমেছিল 24000 টাকায়। আর সব ছাড় ও ক্যাশব্যাক এর পর আমার আসলে খরচ হয়েছিল মাত্র 19000 টাকা।
সব ছাড়ের উপরে আরও 8% পর্যন্ত এক্সট্রা ছাড়!
এত ছাড়ের পরেও অন্য Third-party অ্যাপ ব্যবহার করে অ্যামাজন থেকে কেনাকাটায় 8% পর্যন্ত আরও এক্সট্রা ক্যাশব্যাক পাওয়া যায়। এই নিয়ে অন্য একটা আর্টিকেলে আমি বিস্তারিত আলোচনা করেছি। জানতে হলে নীচের লিঙ্ক টায় ক্লিক করতে পারোঃ
অনলাইনে কেনাকাটার সময় এক্সট্রা ক্যাশব্যাক পাওয়ার ট্রিক! ← [ এখানে ট্যাপ করো ]
বোনাসঃ প্রোডাক্টের দামের ইতিহাস চেক করা
অ্যামাজনে কোনও প্রোডাক্টের দাম কত কম থেকে কত বেশি পর্যন্ত হতে পারে সেটা জানতে চাইলে বা পছন্দের দামের নীচে দাম কখন নামে সেটা জানতে হলে অ্যামাজনে প্রোডাক্টের প্রাইস ট্র্যাকের কৌশল ← এখান থেকে জেনে নিতে পারো।
শেষ করার আগে…
কিসসা খতম করনেসে পহেলে… কিসসা খতম করনেসে পহেলে… এক বাত বাতানা চাহুঙ্গা, Guptadhan.Com ইয়েহ নাম জরুর ইয়াদ রাখনা মেরে ভাই। এইসা হি কাম কে আউর ভি চিজে তুম জান পাওগে! তো ফির আজ কে লিয়ে ইতনা হি! ফির মিলেঙ্গে! টা টা। ভালো থেকো 🙂
অ্যামাজন ভালো নাকি ফ্লিপকার্ট?
অ্যামাজনের কাস্টমার সার্ভিস অতুলনীয়। ফ্লিপকার্ট কেন অন্য কোনো কোম্পানিই এব্যাপারে অ্যামাজনের ধারে কাছে আসবেনা।
অ্যামাজনে নাকি অফলাইনের দোকানে, কোথায় ছাড় বেশী?
নিশ্চিতভাবে অ্যামাজনে। অ্যামাজন এত বড় কোম্পানি আর ওদের যে প্রাইসিং পাওয়ার আছে সেটার সাথে অফলাইনের দোকানগুলো কোনোদিনই পেরে উঠবে না।